শুক্রবার

১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৪ পৌষ, ১৪৩২

চুয়াডাঙ্গার কার্পাসডাঙ্গায় কবি নজরুলের স্মৃতি

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি, রেজাউল করিম

প্রকাশিত: ২৭ আগস্ট, ২০২৫ ১৭:২৫

আপডেট: ২৭ আগস্ট, ২০২৫ ১৭:২৭

শেয়ার

চুয়াডাঙ্গার কার্পাসডাঙ্গায় কবি নজরুলের স্মৃতি
ছবি: কোলাজ বাংলা এডিশন

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অনেক অমূল্য স্মৃতি জড়িয়ে আছে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ঐতিহাসিক কার্পাসডাঙ্গায়। এখানেই তিনি একাধিকবার এসেছেন, থেকেছেন, লিখেছেন কবিতা, গান ও ছড়া। কবির স্মৃতি ধরে রাখতে তার জন্মদিন ও মৃত্যুবার্ষিকী প্রতিবছর জাতীয়ভাবে কার্পাসডাঙ্গায় পালন করা হয়।

চুয়াডাঙ্গা জেলা শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে দর্শনা-মুজিবনগর সড়কের পাশে কার্পাসডাঙ্গায় ১৯২৬ ও ১৯২৭ সালে পরপর দুবার স্বপরিবারে এসেছিলেন নজরুল। কলকাতার আর্মহার্স্ট স্ট্রিটে বসবাসকালে স্থানীয় বৈদ্যনাথ বাবু, হর্ষপ্রিয় বিশ্বাস ও মহিম বাবুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সূত্রে তিনি তাদের আমন্ত্রণে পরিবারসহ কার্পাসডাঙ্গায় আসেন। স্ত্রী প্রমিলা, দুই পুত্র সব্যসাচী ও বুলবুল এবং শাশুড়ি গিরিবালাকে নিয়ে কবি উঠেছিলেন মিশনপাড়ার হর্ষপ্রিয় বিশ্বাসের বাগানবাড়ির আটচালা খড়ের ঘরে। ঘরটি এখনও সংরক্ষিত আছে।

কবি কার্পাসডাঙ্গায় অবস্থানকালে স্থানীয় স্বদেশী আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে গোপনে বৈঠক করেছেন। দিনের বেলা ঝাউগাছের ছায়াতলে গান শিখিয়েছেন মহিম সরকারের দুই কন্যা আভারানী ও শিউলীরানীকে। ভৈরব নদ তীরের সানবাঁধানো ঘাটে বসে রচনা করেছেন অমর কাব্যগ্রন্থ মৃত্যুক্ষুধা। এখানেই তিনি লিখেছেন পদ্মগোখরো কবিতা এবং ‘লিচু চোর-এর অংশবিশেষও এই অঞ্চলের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে।

কবির স্মৃতি ধরে রাখতে ভৈরব নদীর তীরে ও ঝাউগাছের নিচে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া ১৯৯০ সালে স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠে নজরুল স্মৃতি সংসদ। ভৈরব নদ, চার্চ অব বাংলাদেশের স্কুল-হাসপাতাল ও আশপাশের এলাকা কবির স্মৃতিকে আজও ধারণ করে রেখেছে।

আজ কবির ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে প্রতিবছর তার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী জাতীয়ভাবে কার্পাসডাঙ্গায় নানা কর্মসূচির মাধ্যমে পালন করা হয়। এলাকাবাসীর দাবি, কার্পাসডাঙ্গায় নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ও জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হোক, যাতে জাতীয় কবির স্মৃতি আরও বেশি সংরক্ষিত ও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দেওয়া যায়।



banner close
banner close