রবিবার

১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

চকরিয়ায় থানা হাজতে যুবকের মৃত্যু; ওসিসহ আটজনের নামে এজাহার

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৭ আগস্ট, ২০২৫ ১২:৫৯

শেয়ার

চকরিয়ায় থানা হাজতে যুবকের মৃত্যু; ওসিসহ আটজনের নামে এজাহার
ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের চকরিয়ায় থানা হেফাজতে স্কুলের অফিস সহকারি দুর্জয় চৌধুরী নিহতের ঘটনায় এজাহার দায়ের করেছে। দুর্জয় চৌধুরী নিহতের ঘটনার পাঁচদিন পরে এজাহারটি দায়ের করা হয়। মঙ্গলবার রাতে দুর্জয়ের বাবা কমল চৌধুরী বাদি হয়ে চকরিয়ায় থানায় এজাহারটি দায়ের করেন।

এ সময় কক্সবাজার জেলা জজ আদালতের ১০ থেকে ১২জন এ্যাডভোকেট থানায় উপস্থিত ছিলেন।

এজাহারে চকরিয়া থানার সাবেক ওসি শফিকুল ইসলাম, পুলিশের এএসআই হানিফ মিয়া, দুই কনস্টেবল, স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানম ও সহকারি শিক্ষক, অফিস সহায়কসহ আটজন আসামীর নাম উল্লেখ করে এজাহারটি দায়ের করেন। তবে এজাহারটি এখনো মামলা হিসেবে এন্ট্রি হয়নি থানায়।

এজাহারে বাদি কমল চৌধুরী দাবি করেন, ‘আমার ছেলে দুর্জয় চৌধুরী চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার অপারেটর ছিলেন। আমার ছেলে চাকরিতে যোগদানের পর থেকে তাকে বিতাড়িত করার জন্য প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানমসহ স্কুলের দুই সহকারি শিক্ষক ও অফিস সহায়ক চক্রান্ত করতে থাকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্যালয়ের নানা অনিয়ম ও দূর্ণীতি দুর্জয়ের ল্যাপটপে রক্ষিত ছিলো। এসব দূর্ণীতি ও অনিয়ম ধামাচাপা দিতে প্রধান শিক্ষক, দুই সহকারি শিক্ষক ও অফিস সহায়ক মিলে আমার ছেলেকে চিরতরে সরিয়ে দিতে নানা রকম ফন্দি আটে। তারই অংশ হিসেবে আমার ছেলের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তুলে জোর করে ২১ আগষ্ট রাত ১০টায় থানায় নিয়ে যায়।’

তিনি আরও বরেন, ‘চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্জয়কে থানা হাজতে আটকে রাখে। পরবর্তীতে থানার ওসি, এএসআই ও কনস্টেবলের সাথে মোটা অংকের বিনিময়ে গোপন আঁতাত করের প্রধান শিক্ষকসহ অন্য দুই শিক্ষক ও অফিস সহায়ক। এরই অংশ হিসেবে থানার ওসিসহ অপরাপর আসামীরা মিলে দুর্জয়কে হাজতে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যার পরে দুর্জয় নিজে নিজে আত্মহত্যা করেছে বলে অপপ্রচার চালাতে থাকে। কিন্তু আদৌ আমার ছেলে দুর্জয় আত্মহত্যা করেনি, তাকে পরিকল্পিতভাবে থানা হাজতে হত্যা করা হয়েছে।’

কক্সবাজার জেলা জজ আদালতের আইনজীবি এ্যাডভোকেট পিন্টু বড়ুয়া বলেন, ‘থানা হাজতে মৃত্যু কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। এটা মানবাধিকারের সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন। যার কারণে আমরা ন্যায় বিচারের জন্য বাদি কমল চৌধুরকে সাথে নিয়ে চকরিয়া থানায় এজাহার দিয়েছি। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে যদি এজাহারটি মামলা হিসেবে থানায় এন্ট্রি না হয়, তাহলে আদালতে এজাহার দিবো।

তিনি আরও বলেন, এই হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্তেরও দাবি জানাচ্ছি।

এই ব্যাপারে জানতে চাইলে চকরিয়া সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) অভিজিৎ দাস বলেন, ‘দূর্জয় চৌধুরীর বাবা কমল চৌধুরী বাদি হয়ে সন্ধ্যায় থানায় একটি এজাহার দিয়েছেন। এসময় বেশ কযেকজন আইনজীবিও সাথে ছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু এই ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা রুজু হয়েছে। সেটার তদন্ত চলছে। আমরা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো, পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নিবো।’



banner close
banner close