রবিবার

১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

ক্যান্সারে আক্রান্ত রশিদা, অনাহারে শারিরীক প্রতিবন্ধী'সহ দুই সন্তান

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৬ আগস্ট, ২০২৫ ১৭:০০

আপডেট: ২৬ আগস্ট, ২০২৫ ১৮:৩৭

শেয়ার

ক্যান্সারে আক্রান্ত রশিদা, অনাহারে শারিরীক প্রতিবন্ধী'সহ দুই সন্তান
ছবি: বাংলা এডিশন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন অসহায় বিধবা রশিদা বেগম। প্রায় ১০ বছর আগে স্বামীকে হারিয়ে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করা এই নারী বর্তমানে মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। তার শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলে আলিফ ও মেয়ে এখন চরম অনিশ্চয়তার মুখোমুখি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের নাথপাড়া গ্রামে দুই সন্তানকে নিয়ে একটি ভাড়া বাসায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন রশিদা বেগম। সংসারের যাবতীয় খরচ চলত অন্যের বাড়িতে কাজ করে। বেশ কিছুদিন ধরে জরায়ুজনিত সমস্যায় ভুগলেও অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে পারেননি তিনি। ধীরে ধীরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ওই সমস্যা বর্তমানে ক্যান্সারে রূপ নেয়।

রশিদার ছোট ভাই সিএনজি চালক রতন মিয়া বলেন, “আমার বোন দীর্ঘদিন অসুস্থ থেকেও অভাবের তাড়নায় অন্যের বাড়িতে কাজ করেছে। সম্প্রতি শারীরিক জটিলতা বাড়লে স্থানীয় সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম সুমনের উদ্যোগে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরে একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার জরায়ুর সমস্যা এখন ক্যান্সারে রূপ নিয়েছে। দ্রুত ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসা না করালে তাকে আর বাঁচানো সম্ভব হবে না।”

তিনি আরও জানান, “আমার বোন সন্তানদের নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসে। স্বামী অসুস্থ থাকায় সন্তান জন্ম না হওয়ায় সে একটি ছেলে সন্তান দত্তক নেয়, কিন্তু পরে দেখা গেল সে শারীরিক প্রতিবন্ধী। এরপর স্বামী মারা যায়, শুরু হয় অন্যের বাড়িতে কাজ করে সন্তান মানুষ করার সংগ্রাম। নিজের কষ্ট উপেক্ষা করে সন্তানদের জন্য সবসময় লড়াই করেছে রশিদা।”

এ বিষয়ে সরাইল উপজেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম সুমন বলেন, “রশিদা বেগম আমার নিকট প্রতিবেশী। তিনি একজন আদর্শ মা। দত্তক নেওয়া প্রতিবন্ধী সন্তানকে যেভাবে লালন-পালন করেছেন, তা অনেক জন্ম দেওয়া সন্তানকেও অনেকে করে না। মরণব্যাধি এই রোগে রশিদা বেগম মৃত্যুর কাছে হার মানলে তার দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে হারিয়ে যাবে। রশিদা বেগম বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

চিকিৎসার জন্যে অনেক টাকার প্রয়োজন। আমি সকলের কাছে তার জন্যে সহযোগিতা কামনা করছি। আমরা আশাবাদী, উন্নত চিকিৎসা পেলে তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসবেন, ইনশাআল্লাহ।”



banner close
banner close