যশোরে তুলে নিয়ে দুই যুবককে হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগ এনে সাবেক পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, টিএসআই রফিকুল ইসলাম রফিক ও কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে । গুম হওয়া যুবক সাইদুর রহমানের বাবা সদর উপজেলার তরফ নওয়াপাড়া গ্রামের কাজী তৌহিদুর রহমান খোকন বাদী হয়ে রোববার মামলাটি দায়ের করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী মিলন আহমেদ। তিনি জানান, অভিযোগ আমলে নিয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রহমত আলী কোতোয়ালী থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, পিরোজপুর সদর উপজেলার কুমারখালী গ্রামের শ্যাম হাওলাদারের ছেলে ফুলু মিয়া, মৃত হাকিম শেখের দুই ছেলে রমিজ শেখ ও নাসির শেখ, মৃত হাই শেখের ছেলে সাইফুল শেখ, জব্বার শেখের ছেলে হারুন অর রশিদ শেখ, মৃত সেলিম শেখের ছেলে জাহিদুল শেখ এবং জাহাঙ্গীর তালুকদারের ছেলে আল আমিন তালুকদার।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, বাদী যশোরে বসবাস করলে তাদের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের কুমারখালীতে। সেখানে তাদের অনেক সম্পত্তি রয়েছে। যশোরের সাবেক এসপি আনিস, টিএসআই রফিক ও সাবেক কাউন্সিলর শংকরপুরের গোলাম মোস্তফা ছাড়া অন্য আসামিরা সবাই পিরোজপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তারা যোগসাজশে ২০১৭ সালের ৫ এপ্রিল সাইদ ও তার বন্ধু শাওন দুপুরে যশোর শহরের পৌরপার্কে ঘুরতে গেলে অভিযুক্ত সাবেক কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফাসহ অন্যদের উপস্থিতিতে টিএসআই রফিক তাদের আটকের পর মারধর করে। বাদীর দাবি এ ঘটনার নির্দেশদাতা ছিলেন সাবেক পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান।
বাদী অভিযোগ করেছেন, আসামীরা ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করলেও সাইদ ও শাওনকে আদালতে সোপর্দ করেননি। এক পর্যায়ে বাদীর স্ত্রী হিরা বেগম আদালতে এ ঘটনায় মামলা করেন। এ খবর পেয়ে টিএসআই রফিক বাদীর স্ত্রীকে আটক করে সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের বাড়িতে আটকে রাখেন এবং মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। হিরা বেগমকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করানো হয়। এতে অসুস্থ হয়ে পড়েন হিরা বেগম এবং এক সময় মারা যান। এরপরও সাইদ ও তার বন্ধু শাওনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়নি। এবং আজ অবধি তাদের খুঁজেও পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন:








