চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারী আব্দুল গাফফার আকাশকে চলন্ত ট্রেন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হত্যা মামলার তদন্ত শেষ হয়নি তিন মাসেও। মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথুলী ইউনিয়নের সেনেরহুদা গ্রামের জিন্নাত আলীর ছেলে আকাশ চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসের গেট কিপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অফিসে যাতায়াত করতেন ট্রেনে।
প্রতিদিনের মতো গত (২১ মে) অফিস শেষ করে চুয়াডাঙ্গা স্টেশন থেকে কপোতাক্ষ-৭১৬ (রাজশাহী থেকে খুলনা) একপ্রেস ট্রেন এর (ঙ) বগিতে চড়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করেন আকাশ। ট্রেন এ উঠে দেখেন- জুনিয়র টিটিই লালন, রেল পুলিশের এস আই পারভেজ, কনস্টেবল কাদের, এটেনডেন্ট মিলন ও সোহাগ মিয়া সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪-৫ জন বিনা টিকিটে ট্রেনে ওঠা যাত্রীদের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে টাকা নিচ্ছেন। টাকা দিতে না পারলে যাত্রীদের কে নানা ভাবে হেনস্তা করছে।
ঘটনাটি দেখার পরে আকাশ প্রতিবাদ করলে আসামীরা একজোট হয়ে তার সাথে বাকবিতণ্ডা শুরু করে। এক পর্যায়ে আসামীরা আকাশকে ট্রেনের দরজার কাছে নিয়ে জয়রামপুর রেলওয়ে স্টেশন এর আনুমানিক ১৫০-২০০ গজ পূর্বে চলন্ত ট্রেন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। পরবর্তিতে স্থানীয়রা তাকে মৃত অবস্থাই উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় গত (২৬ মে) নিহত আব্দুল গাফফারের পিতা জিন্নাত আলী বাদি হয়ে ৫ জন কে আসামী করে চুয়াডাঙ্গা আদালতে এ হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামীরা হলেন- কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনের 'ঙ' বগিতে দায়িত্বে থাকা টিটিই লালন চক্রবর্তী, রেলওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক পারভেজ, কনস্টেবল কাদের, এটেনডেন্ট মিলন ও সোহাগ মিয়া।
এ প্রসঙ্গে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) কনক কুমার দাস বলেন, হত্যা মামলাটি বর্তমানে ঝিনাইদহ পিবিআই তদন্ত করছে।
ঝিনাইদহ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন(পি বি আই)পুলিশ সুপার গাজী রবিউল হক বাংলা এডিশনকে বলেন, আমরা ইতোমধ্যে কপোতাক্ষ-৭১৬ ট্রেনের (ঙ)বগিতে থাকা প্রতিটি যাত্রীর সাথে যোগাযোগ করছি। তাদের সঙ্গে সকল বিষয়ে কথা বলেছি। মামালার তদন্ত চলমান রয়েছে। এর থেকে বেশি আপাতত কিছু বলার নেই।
এদিকে একমাত্র সন্তানকে হারিযে দিশেহারা আকাশের অসুস্থ বাবা জিন্নাত আলী বলেন, আমি কর্ম করতে পারিনা। আমার সন্তানই আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলো। আমি আমার মৃত্যুর আগে আমার সন্তান হত্যাকারীদের বিচার দেখে মরতে চাই।
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, আমার সন্তান হত্যার ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও মামলার কোন অগ্রগতি নেই। হত্যা মামলার আসামিরা সবাই বাইরে বুক ফুলিয়ে বেড়াচ্ছে।আমি আমার একমাত্র সন্তান হত্যার বিচার চাই।
এ বিষয়ে টিটিই লালন চক্রবর্তী ও খুলনা রেলওয়ে পুলিশের এস আই পারভেজ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঘটনার দিন আমরা কপোতক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনে ডিউটিতে ছিলাম। কিন্তু কোন যাত্রীর সাথে এমন কোন ঘটনা আমাদের সাথে ঘটেনি। আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
আরও পড়ুন:








