জনগণের সেবার জন্য বরাদ্দ সরকারি গাড়ি ব্যবহার হলো মাছ শিকারে। নওগাঁর নিয়ামতপুরে সরকারি ছুটির দিনে তিন থেকে চারটি সরকারি গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে একটি চাষকৃত মাছের পুকুরপাড়ে। সেখানে প্রশাসনের কয়েকজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা মেতে ছিলেন মাছ ধরায়।
শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের আঘোর গ্রামের একটি দিঘিতে এ ঘটনা ঘটে।
পুকুরটি স্থানীয় রাসেল নামে এক ব্যক্তির লিজকৃত। তিনি সাধারণ মানুষকে দুই দিনের জন্য বড়শি ফেলে মাছ ধরার সুযোগ দিতেন ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে। কিন্তু প্রশাসনিক কর্মকর্তারা সেখানে কোনো খরচ ছাড়াই মাছ ধরতে যান। এমনকি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকেও এক কর্মকর্তা বন্ধুর দাওয়াতে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে সেখানে আসেন।
পুকুরপাড়ে মাছ ধরতে দেখা যায় নিয়ামতপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেজাউল করিম, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক, পত্নীতলা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জুয়েল মিয়া এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুলতানা রাজিয়াকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিয়ামতপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেজাউল করিম বলেন, “এটি সরকারি দিঘি, তাই আমরা মাছ ধরতে গিয়েছি।”
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সরকারি গাড়ি নিয়ে ব্যক্তিগত কাজে আসার বিষয়ে নাচোল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুলতানা রাজিয়া জানান, তিনি বন্ধুর দাওয়াতে এসেছেন।
অন্যদিকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামও মাছ ধরার বিষয়টি স্বীকার করেছেন, তবে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
লিজগ্রহীতা রাসেল বলেন, “দুই দিনের জন্য সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নেওয়া হয়। তবে প্রশাসনের কেউ কোনো টাকা দেয়নি।”
সচেতন মহল বলছেন, জনগণের করের টাকায় পরিচালিত সরকারি গাড়ি এভাবে ব্যক্তিগত বিনোদনে ব্যবহার করা শুধু অনিয়ম নয়, এটি সরাসরি সরকারি আইন ও নিয়মের লঙ্ঘন। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং জনগণের মধ্যে নেতিবাচক বার্তা ছড়িয়ে পড়ে।
তাদের প্রশ্ন, জনগণের সেবার জন্য ব্যবহৃত সরকারি সম্পদ যদি ভোগ-বিলাসে খরচ হয়, তবে এ দায়ভার নেবে কে?
আরও পড়ুন:








