নারায়ণগঞ্জে এক সময় ক্ষমতা ও সন্ত্রাসের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলো প্রভাবশালী ওসমান পরিবার। বিশেষ করে, সাবেক এমপি শামীম ওসমান, সেলিম ওসমান ও প্রয়াত নাসিম ওসমানের নাম শহরজুড়ে উচ্চারিত হতো আতঙ্কের প্রতিশব্দ হিসেবে। শুধু নারায়ণগঞ্জ নয়, ফ্যাসিস্ট হাসিনার সাহচর্যে এসে জাতীয় রাজনীতিতেও প্রভাব বিস্তার করেছিলো এ পরিবারের সদস্যরা।
তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ওসমান পরিবারের সবাই এখন লাপাত্তা। ইতোমধ্যে তাদের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানের কাজ শুরু করেছে দুদক। আর এতেই দিশেহারা অবস্থা পলাতক ওসমান পরিবারের সদস্যদের। তাইতো স্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে অর্থ উদ্ধারের প্রাণান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছে শামীম-সেলিমরা।
বাংলা এডিশনের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইতোমধ্যে ওসমান পরিবারের চারটি বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান ফকির অ্যাপারেলস লিমিটেড। এর মধ্যে সেলিম ওসমানের তিনটি ও শামীম ওসমানের একটি। বাড়িগুলোর মোট বাজারমূল্য প্রায় কয়েক’শো কোটি টাকা। বিক্রি হওয়া একটি বাড়ির দারোয়ান বাংলা এডিশনকে জানান, ওসমান পরিবারের চারটি বাড়ির মালিকানা এখন ফকির গ্রুপের।
নারায়ণগঞ্জ শহরের উত্তর চাষাঢ়ায়, রামবাবুর পুকুরপারে সেলিম ওসমানের পাশাপাশি তিনটি বহুতল ভবনের প্রধান ফটকে মালিকানা পরিবর্তনের সাইনবোর্ড ঝুলছে। সেখানে লেখা, ক্রয়সূত্রে এসব বাড়ির মালিক ফকির অ্যাপারেলস লিমিটেড। এর মধ্যে দুটি বাড়ি বর্তমানে ভাড়া দেয়া এবং অন্যটি খালি রয়েছে।
গত ৫ আগস্টের পর বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা এ দুটি বাড়ি ভাঙচুর করতে গেলেও বাড়ির মূল ফটকে মালিকানা পরিবর্তনের সাইনবোর্ড দেখে ফিরে যায়। তবে এখানে থাকা সেলিম ওসমানের অপর বাড়িটিতে হামলা ও ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।
এদিকে, ওসমান পরিবারের মালিকানায় থাকা চারটি বাড়ি বিক্রি হয়েছে বলে গুঞ্জন থাকলেও ফকির গ্রুপ জানায়, ৫ আগস্টের আগেই তারা বাড়িগুলো ক্রয় করেছে। ফকির নিটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফকির আক্তারুজ্জামানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলা এডিশনকে এ কথা বলেন।
তার মতে, তিনি নন, তার ছোট ভাই ফকির মনিরুজ্জামান ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগেই ন্যায্য দাম দিয়ে বাড়িগুলো কিনেছিলো। তবে মনিরুজ্জামান মোট কয়টি বাড়ি কিনেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিককে এটি অনুসন্ধান করে বের করতে বলেন।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বাংলা এডিশনকে জানান, ওসমান পরিবার সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছিলো। সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানের মতো হত্যা মামলার পলাতক আসামিদের কাছ থেকে ফকির গ্রুপ কীভাবে বাড়িগুলো কিনেছিলো সেটির বিরুদ্ধেও তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানায় তারা।
ভিডিও লিংক: https://www.youtube.com/watch?v=GZdC0JtXp2E&t=171s
আরও পড়ুন:








