শুক্রবার

১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৪ পৌষ, ১৪৩২

চাঁপাইনবাবগঞ্জে জুলাই মাসে ১৬৪টি অপরাধ সংঘটিত

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯ আগস্ট, ২০২৫ ১১:৩৪

শেয়ার

চাঁপাইনবাবগঞ্জে জুলাই মাসে ১৬৪টি অপরাধ সংঘটিত
ছবি: সংগৃহীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গত জুলাই মাসে বিভিন্ন ধরনের মোট ১৬৪টি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। এসব অপরাধের মধ্যে মাদক ও চোরাচালান সংক্রান্ত মামলা সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে। এ ছাড়া হত্যা, ধর্ষণ, নারী ও শিশু নির্যাতন, চুরি, ডাকাতি এবং দস্যুতার মতো গুরুতর অপরাধও রেকর্ড করা হয়েছে।

মাদকবিরোধী অভিযানে জুলাই মাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ৪টি উপজেলায় মোট ৪১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যা আগের মাস জুনে ছিল ৩১টি। অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়, যার মধ্যে ইয়াবা, গাঁজা ও ফেনসিডিল উল্লেখযোগ্য। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মতে, সীমান্তবর্তী হওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাদক ও চোরাচালানের প্রবণতা তুলনামূলক বেশি, যা নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত অভিযান চলছে।

গত মাসে জেলায় ৩টি হত্যা মামলা রেকর্ড হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ১০টি, চুরি ও ডাকাতির ঘটনা ৬টি এবং নারী ও শিশু ধর্ষণের মতো স্পর্শকাতর অপরাধ সংঘটিত হয়েছে ৫টি। এসব ঘটনার মধ্যে কিছু মামলা তদন্তাধীন এবং কিছু মামলার আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

উপজেলা ভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, অপরাধের সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে শিবগঞ্জ উপজেলা। শুধুমাত্র জুলাই মাসেই এখানে সংঘটিত হয়েছে ৬২টি অপরাধ, যার মধ্যে মাদক ও চোরাচালান সংক্রান্ত মামলা ২০টি। সীমান্তবর্তী এ উপজেলার ভৌগোলিক অবস্থান ও নদী পথ ব্যবহার করে মাদক ও অবৈধ পণ্যের প্রসার বাড়ছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সদর উপজেলা, যেখানে ৪৮টি অপরাধের মামলা রেকর্ড হয়েছে। সদর এলাকায় নারী ও শিশু নির্যাতন, চুরি এবং মাদক মামলার হার উল্লেখযোগ্য। জেলা সদর হওয়ায় এখানে জনসংখ্যা ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম তুলনামূলক বেশি, যা অপরাধ প্রবণতাকেও প্রভাবিত করছে।

অপরদিকে গোমস্তাপুর উপজেলায় জুলাই মাসে মাদক ও চোরাচালানের ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। জুন মাসে যেখানে এই উপজেলায় মাদক ও চোরাচালান সংক্রান্ত মামলা ছিল মাত্র ৩টি, সেখানে জুলাইয়ে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১টিতে। এ ছাড়া অন্যান্য অপরাধ মিলিয়ে মোট ৩০টি মামলা রেকর্ড হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, সম্প্রতি সীমান্তপথে নজরদারি কমে যাওয়া এবং নতুন কিছু রুট সক্রিয় হওয়ায় মাদকের ব্যবসা বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এ এন এম ওয়াসিম ফিরোজের সাথে সার্বিক বিষয়ে কথা বলতে গেলে তিনি বাংলা এডিশনকে বলেন, ‘আমরা অপরাধ দমন ও উদ্ধারে সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে। মাদক ও চোরাচালান নিয়ন্ত্রণে বিশেষ অভিযান অব্যাহত আছে, পাশাপাশি জনসচেতনতামূলক বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে উঠান বৈঠক ও ওপেন হাউজ ডে কার্যক্রমও চলমান আছে।’

তিনি আরও জানান, ‘শিবগঞ্জ সীমান্তবর্তী বড় এরিয়ার উপজেলা। এখানে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা সবসময়ই বেশি থাকে। শিবগঞ্জ উপজেলাকে আমরা সবসময়ই বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি।

জেলা পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুলাই মাসের অপরাধ প্রবণতার ধারা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে মাদক ও চোরাচালানই জেলার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ এবং নারী ও শিশু নির্যাতনের মতো সামাজিক অপরাধও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।



banner close
banner close