চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ফের বিএসএফের অমানবিক নির্মমতার অভিযোগ উঠেছে। এবার ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের বিরুদ্ধে অ্যাসিডে পুড়িয়ে দুই বাংলাদেশী যুবককে হত্যার অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের বাতাসি মোড় এলাকার পদ্মা নদী থেকে অ্যাসিডে ঝলসানো অবস্থায় শফিকুল ইসলাম (৪৫) ও সেলিম রেজা (৩৫) নামে দুই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। দুজনেই শিবগঞ্জ উপজেলার তারাপুর গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সমির উদ্দিন জানান, নিহত শফিকুল ইসলাম গত বৃহস্পতিবার ভারত থেকে গরু আনতে গিয়েছিলেন এবং এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন। পরে শনিবার দুপুরে পদ্মা নদীতে মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা শফিকুল এবং সেলিমকে শনাক্ত করে। দুইজনের শরীরই ছিল ঝলসানো এবং বিকৃত, যা দেখে ধারণা করা হচ্ছে, অ্যাসিড দিয়ে হত্যার পর মরদেহ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সীমান্ত হত্যাকাণ্ড এখন আর শুধু গুলি করে সীমাবদ্ধ নেই, বরং হত্যার কৌশলেও এসেছে নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতার নতুন রূপ। অনেকেই বলছেন, এই দুই রাখালকে পরিকল্পিতভাবে অ্যাসিড দিয়ে ঝলসে, মৃত্যু নিশ্চিত করে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন এই প্রতিবেদককে জানান, সীমান্ত এলাকায় বিজিবি ও বিএসএফের যোগসাজশে রাখালদের মাধ্যমে ভারত থেকে গরু আনার কার্যক্রম চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। প্রতিটি ট্রিপের জন্য রাখালদের মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়া হয়। আর বিজিবি ও বিএসএফ উভয় পক্ষের কিছু অসাধু সদস্য এই চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিজিবি’র বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু বাংলা এডিশনকে জানান, “এ ধরণের অভিযোগ সম্পূর্ণ ধারণা প্রসূত। এর সাথে বিজিবির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।” সাম্প্রতিক সময়ে বিএসএফের তৎপরতা ও বাংলাদেশিদের হত্যার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “বিএসএফের তৎপরতা বেড়েছে এমনটা বলা যাবে না। আগের মতোই পরিস্থিতি রয়েছে।”
এই ঘটনার মাত্র কয়েকদিন আগেই, গত সোমবার, চাঁপাইনবাবগঞ্জের মনোহরপুর সীমান্ত দিয়ে গরু নিয়ে ফেরার পথে বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে নৃশংসভাবে নিহত হন সৈয়বুর আলী। নিহত সৈয়বুর ছিলেন পাঁকা ইউনিয়নের দশরশিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানের ছেলে। সে ঘটনায় তার সঙ্গী রুহুল আলী এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সীমান্তে বসবাসরত সাধারণ মানুষ এখন ভীত ও আতঙ্কিত।
আরও পড়ুন:








