আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বাগেরহাট জেলার একটি সংসদীয় আসন কর্তনের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সর্বদলীয় ঐক্যজোটের ব্যানারে এক প্রতিবাদী সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
জেলার প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা এতে একত্রে অংশগ্রহণ করে নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত আসন কর্তনকে “ষড়যন্ত্রমূলক, অগণতান্ত্রিক এবং জনগণের প্রতিনিধিত্ব সংকুচিত করার অপচেষ্টা” হিসেবে অভিহিত করেন।
বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার এটিএম আকরাম হোসেন তালিম বলেন, “জেলার চারটি সংসদীয় আসনের একটি বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা নির্বাচন কমিশন ও সরকারের যৌথ ষড়যন্ত্র। এটি বাস্তবায়িত হলে দক্ষিণাঞ্চলের জনগণ রাজনৈতিকভাবে বৈষম্যের শিকার হবে। আমরা এই ষড়যন্ত্র মেনে নেব না।”
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বাগেরহাটের ইতিহাস, জনসংখ্যা, ভৌগোলিক বিস্তার ও রাজনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনায় চারটি আসন অপরিহার্য। কোনো আসন কর্তনের পরিবর্তে বরং নতুন আসন সংযোজনের দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন—
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান শামীম
জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির মাওলানা রেজাউল করিম
জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান সমন্বয়ক এম এ সালাম
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক খাদেম নিয়ামুল নাছির আলাপ
ব্যারিস্টার জাকির হোসেন
কাজী খায়রুজ্জামান শীপন
জামায়াতের সূরা সদস্য ও যুব বিভাগের সভাপতি মুঞ্জুরুল হক রাহাত
খেলাফত মজলিশ জেলা শাখার সভাপতি মুফতি রমিজ উদ্দিন
জামায়াতে ইসলামী বাগেরহাট জেলা নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট আব্দুল ওয়াদুদ
সহ অন্যান্য সমমনা দলের নেতৃবৃন্দ।
আন্দোলনের কর্মসূচি:
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, আসন কর্তনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে শনিবার (২ আগস্ট) জেলার প্রতিটি উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল, রোববার (৩ আগস্ট) জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ এবং এরপর দাবি পূরণ না হলে জেলাজুড়ে লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
নেতারা বলেন, “এটি শুধু রাজনৈতিক দাবি নয়, জেলার মানুষের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে আমরা বাগেরহাটের স্বার্থে এক হয়েছি।”
নির্বাচন কমিশনের প্রতি হুঁশিয়ারি:
নেতারা নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়ে যদি জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নেন, তবে সেই শপথ ভঙ্গের দায়ে একদিন জবাবদিহি করতে হবে।”
বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তেজনা:
সংবাদ সম্মেলনের পর বাগেরহাটে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত থেকে সরে না এলে জেলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে, যার প্রভাব পড়বে সার্বিক নির্বাচনী পরিবেশে।
বাগেরহাটবাসী এখন তাকিয়ে রয়েছে নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে। জেলা নেতাদের ঘোষণা—“আসন কর্তনের সিদ্ধান্ত বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে, থামবে না।”
আরও পড়ুন:








