শনিবার

২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৫ পৌষ, ১৪৩২

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ৪ বছরেও শেষ হয়নি সড়ক নির্মাণ

নরসিংদী প্রতিনিধিঃ

প্রকাশিত: ৩১ জুলাই, ২০২৫ ১০:৪০

আপডেট: ৩১ জুলাই, ২০২৫ ১০:৪৬

শেয়ার

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ৪ বছরেও শেষ হয়নি সড়ক নির্মাণ
ছবি সংগৃহীত

চার বছর আগে শুরু হয় জনবহুল গুরুত্বপূর্ণ একটি গ্রামীণ সড়ক নির্মান কাজ। শুরু থেকে মাটির সড়কটি পাকাকরণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অবহেলা আর গাফিলতি ছিল চরমে। ফলে চার বছর পেরিয়ে গেলেও মাটির সড়কটি এখনো পূনাঙ্গ পাকাকরণ হয়নি।

নরসিংদী জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বেলাব উপজেলাধীন আমলাব-রাজারবাগ পাকা রাস্তা থেকে আবদুল্লানগর পর্যন্ত ১৫০০ মিটার দীর্ঘ এই সড়ক নির্মাণের কাজ চার বছরেও শেষ না হওয়ায় বর্তমানে জনদূর্ভোগ পৌছেছে চরমে।

প্রায় ২ কোটি ৭৪ লাখ ২৩ হাজার ৫০৮ টাকা চুক্তিমূল্যের এ প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইব্রাহিম কনস্ট্রাকশন যথাসময়ে কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।

প্রকল্পটির সড়ক আইডি ৩৬৮০৭৫২৩৪। এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৮ মার্চ ওয়ার্ক অর্ডার পাওয়ার পর সড়কটির নির্মাণকাজ শুরু করার কথা ছিল এবং ২ বছরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পটির মেয়াদ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।

বর্ধিত সময়েরও চার মাস অতিবাহিত হয়েছে, কিন্তু এখনো পর্যন্ত কাজের কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। স্থানীয়রা বলছেন, বছরের পর বছর ধরে অসম্পূর্ণ রাস্তার কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। বর্ষা মৌসুমে সড়কটিতে হাঁটাও কঠিন হয়ে পড়ে। বর্যাকালে সড়ক জুড়ো কাঁদা বড় বড় গর্তে টুইটম্বর পানির কারনে ছোটবড় দূর্ঘটনা ঘটে এই সড়কে নিয়মিত।

অন্যদিকে শুষ্ক মৌসুমে ধুলাবালিতে নাকাল হন পথচারীরা। শিক্ষার্থী, কৃষক ও রোগী পরিবহণেও দেখা দিচ্ছে নানা সমস্যা।

জানা যায়,গুরুত্বপূর্ণ এই গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন রাজারবাগ,লাখপুর,আব্দুল্লানগর

সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। এই সড়কটি দিয়ে রাজারবাগ বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়,রাজারবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লাখপুর উচ্চ বিদ্যালয়.লাখপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,উজিলাব সুফিয়া বাতেন উচ্চ বিদ্যালয়,বেলাব সরকারী হোসেন আলী কলেজে প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী আসা যাওয়া করে। সড়কটি পাকাকরণ না হওয়া সাধারণ মানুষদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরও তাদের বিদ্যাপিঠে আসা যাওয়ার বেলায় বিঘ্ন সৃষ্টি হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “চার বছর ধরে এই রাস্তাটি একই অবস্থায় পড়ে আছে। কাজের নামে শুধু মাটি কাটা আর কিছু কংক্রিট ফেলা হয়েছিল, এরপর আর কিছুই হয়নি।

আমলাব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল হাসান জানান,এই সড়কটি ইউনিয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে পাকাকরণের কাজ সমাপ্তি না হওয়ায় জনগন ভোগান্তিতে আছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে কন্টাকটারকে একাধিকবার দ্রুত নির্মানকাজ শেষ করার জন্য অনুরোধ করছি। কিন্তু শুরু থেকে ঠিকাদারের গাফিলতি ছিল বেশি। তবে বর্তমানে সম্ভবত মাটি ভরাট ও কংক্রিট বিছানোর কাজ শেষ করেছে। আমি আশাবাদী পিচডালাই খুব দ্রুত শেষ হবে।

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইব্রাহিম কনস্ট্রাকশনের একজন প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, “বিভিন্ন সমস্যার কারণে কাজটি বিলম্বিত হয়েছে। তবে আমরা অতি শিগগিরই কাজ পুনরায় শুরু করব।”

বেলাব উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম সারোয়ার বলেন, “ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও তারা কাজ শুরু করেনি। আমরা তাদের অফিসিয়ালি চিঠি দিয়েছি এবং দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।”

ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই দীর্ঘসূত্রতা ও গাফিলতির কারণে শুধু সরকারি অর্থের অপচয়ই হচ্ছে না, বছরের পর বছর ভোগান্তিতে পড়ছেন তারা। দ্রুত নির্মাণ কাজ শুরু করে জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।



banner close
banner close