মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে সুতালড়ি ইউনিয়নের অসহায় ও দুঃস্থ নারীদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সহকারী প্রকৌশলী রিপন আলীর এস্টিমেট খরচ তৈরি , ইউপি সচিব মো.মঞ্জুরুল হক ভূঁইয়া ও প্রকল্প সভাপতি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সোলাইমান ওরফে সুরমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বাজারমূল্যের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ মূল্যে সেলাই মেশিন ক্রয় করে প্রকল্পে অতিরিক্ত ব্যয় দেখানো হয়েছে অভিযোগ উঠে।
জানা গেছে, ২০২৪=২৫ অর্থ বছরে ইউনিয়ন উন্নয়ন সহায়তা (এডিপি) অর্থায়নে হতদরিদ্র নারীদের আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সেলাই মেশিন বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ প্রকল্পে ব্যয় নির্ধারণে প্রতিটি সেলাই মেশিনের মূল্য নির্ধারণ করা হয় ১৪ হাজার ২ শ ৪৭ করে সর্বমোট ২ লক্ষ ৫৯ হাজার ৫০০ টাকা। বরাদ্দের পুরো টাকা দিয়েই বাটারফ্লাই ব্র্যান্ডের সেলাই মেশিন কেনা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। অথচ এই সেলাই মেশিনের বর্তমান বাজারমূল্য ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা। এ প্রকল্প থেকে বরাদ্দের অতিরিক্ত টাকা ভাগবাটোয়ারের অভিযোগ উঠে। ১৮টি সেলাই মেশিন ক্রয়ে প্রায় লাখ টাকার অধিক বেশি দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনুর আক্তার বিতরণ করতে গিয়ে মেশিনের দাম জানতে চাইলেই বেশি দামের বিষয়টি নজরে আসে। সাথে সাথে বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ করেন তিনি।
বুধবার সকালে ইউএনও কোহিনুর আক্তার বলেন, যেহেতু সেলাই মেশিনের বাজারদরের সঙ্গে প্রকল্পে উল্লেখিত দামের পার্থক্য রয়েছে, তাই সরকারি অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে বিতরণ স্থগিত রাখা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।””
উপজেলা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী রিপন আলী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “বাজার যাচাই করেই সেলাই মেশিন ক্রয়ের এস্টিমেট খরচ তৈরি করা হয়েছে । আর ক্রয়ের সাথে আমি নেই। ইউপি সচিব চেয়ারম্যানসহ প্রকল্প কমিটির সদস্যরা বলতে পারেন। আর এখনো তো বিলই হয়নি। তারা নিজের টাকা দিয়ে কিনতে পারেন।
সুতালড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. মঞ্জুরুল হক ভূঁইয়া জানান, এলজিইডি প্রকৌশলীর দেয়া এস্টিমেট খরচ অনুযায়ী ক্রয় করা হয়েছে। আর ক্রয় করেছে কমিটি, আমি কমিটির সাথে মানিকগঞ্জ গিয়েছিলাম অন্যকাজে, আমি ক্রয় করিনি।
প্রকল্প কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য সোলাইমান ওরফে সুরমান বলেন, এলজিইডি প্রকৌশলীর দেয়া এস্টিমেট খরচ অনুযায়ী ক্রয় করা হয়েছে। এখানে ভ্যাট ট্যাস্কসহ আনুষাঙ্গিক খরচ আছে। কোটেশন করতে হয়। আরও খরচপাতি আছে বোঝেনই তো।
তবে বাজার থেকে প্রকৃত পক্ষে সেলাই মেশিন প্রতিটি কত টাকা দরে কেনা হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, এটা আমার কাছ থেকে না জানলেন।
তবে একাধিক এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই প্রকল্পে অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি অর্থ লোপাটের চেষ্টা হয়েছে। তারা অবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান।
আরও পড়ুন:








