শনিবার

২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৫ পৌষ, ১৪৩২

কালকিনিতে আড়িয়াল খাঁর ভাঙনে নিঃস্ব দুই শতাধিক পরিবার

মাদারীপুর প্রতিনিধি:

প্রকাশিত: ২৯ জুলাই, ২০২৫ ১৫:৫৯

শেয়ার

কালকিনিতে আড়িয়াল খাঁর ভাঙনে নিঃস্ব দুই শতাধিক পরিবার
ছবি সংগৃহীত

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার সাহেবরামপুর এলাকার নতুন আন্ডারচর ও লঞ্চঘাট অঞ্চলে আড়িয়াল খাঁ নদীর তীব্র ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে দুই শতাধিক পরিবার। ভাঙনের কবলে পড়ে ইতোমধ্যে একটি গ্রামীণ সড়কের প্রায় ৭০০ মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

৭০ বছর বয়সী চান মিয়া জীবনের তৃতীয়বারের মতো ঘরবাড়ি হারিয়ে এখন নদীর পাড়ে সরকারি জমিতে একটি টিনের ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন। অপলক চোখে নদীর ওপার চেয়ে তিনি বলেন, “আমাগো বাড়িঘর, জায়গাজমি—সব নদী খাইছে। তিনবার বাড়ি গেছে, কতো না খাইয়া থেকেছি, তার হিসাব নাই।”

তার প্রতিবেশী, ৭৫ বছর বয়সী বজলু সরদার সাতবার নদীভাঙনের শিকার হয়ে এখন সহায়সম্বলহীন। বলেন, “সরকার থেকে কিছুই পাইনি। একবার শুনছিলাম ঘর দিবে, কিন্তু কিছুই পাইনি। এক পোলার রোজগারে কোনোরকমে বাঁচতেছি।”

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আড়িয়াল খাঁ নদীর তাণ্ডবে নতুন করে দুই শতাধিক বসতঘর বিলীন হয়েছে। ঝুঁকির মুখে রয়েছে সাহেবরামপুরের বঙ্গবন্ধু কলেজ, হাজী করিমখানের হাট, ৭৩নং নতুন আন্ডার প্রাথমিক বিদ্যালয়, নবারুন উচ্চ বিদ্যালয়, ইমদাদুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা, আল মাহমুদ হাফিজিয়া মাদ্রাসা, পোস্ট অফিস এবং গোলপাতা বাজারসহ একাধিক স্থাপনা।

ভাঙনরোধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার সকালে এলাকাবাসী ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন প্রধান শিক্ষক আবুল হালিম, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন, ভারপ্রাপ্ত সুপার জাকির হোসেন, ইউপি সদস্য মোকলেশুর রহমান ও শিক্ষক আরাফাত হোসেন।

এ বিষয়ে মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শুভ সরকার জানান, “সাহেবরামপুর এলাকার ভাঙন কবলিত অংশগুলো পরিদর্শন করেছি। ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।”

কালকিনি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফ উল আরেফিন বলেন, “ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে দ্রুত সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া হবে। চলতি অর্থবছরে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।”



banner close
banner close