শনিবার

২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৫ পৌষ, ১৪৩২

ভূঞাপুরে মাদরাসা ছাত্রকে যৌন নির্যাতন: মোটা অঙ্কের টাকায় আপোষের অভিযোগ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:

প্রকাশিত: ২৭ জুলাই, ২০২৫ ২১:৪৫

শেয়ার

ভূঞাপুরে মাদরাসা ছাত্রকে যৌন নির্যাতন: মোটা অঙ্কের টাকায় আপোষের অভিযোগ
ছবি সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে আল-কারীম দারুর উলুম আজাদী মাদরাসার এক ১১ বছর বয়সী ছাত্রকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ওই মাদরাসার শিক্ষক ওয়ালী উল্লাহর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে এলাকাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। অভিযোগ উঠেছে, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এবং পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

জানা যায়, গত মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাতে মাদরাসায় ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা ভুক্তভোগী ছাত্রকে কাজের কথা বলে নিজের কক্ষে ডেকে নিয়ে যান অভিযুক্ত শিক্ষক ওয়ালী উল্লাহ। সেখানে প্রথমে তিনি ছাত্রটিকে দিয়ে তার পা ও শরীর মালিশ করান। পরবর্তীতে তাকে যৌনাঙ্গ মালিশ করতে বাধ্য করা হয় এবং এক পর্যায়ে তার সাথে যৌনাচারে লিপ্ত হন বলে অভিযোগ।

এই বর্বরোচিত ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই সাংবাদিকদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে একটি মহল। এ নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক পরিবারে সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় প্রভাবশালীরা একটি আপোষে বসেছিলো। এসময় আপোষকারীদের অন্যতম একজন ইসলামী আন্দোলনের ভূঞাপুর উপজেলা আমীর মুফতি আসাদুজ্জামান শামীম, ভূঞাপুর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান গিয়াস ফকির ও পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হারুন আর রশিদসহ স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি আপোষের চাপ সৃষ্টি করে আপোষ মিমাংসা করে বাধ্য করে।

নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক পরিবারে সদস্যরা আরো জানায়, এবিষয়টি নিয়ে সাবেক সেনা সদস্য ও পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হারুন আর রশিদ আমাদের নানা প্রকার ভয় দেখিয়ে জিম্মি রেখেছেন তার জন্য আইনের আশ্রয় ও মিডিয়া সামনে যেতে পারছি না। তার কারণেই আমরা আইনের আশ্রয় নিতে পারছি এবং কেউ নিরাপত্তার জন্য এগিয়ে আসেনি।

এই ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের কঠোর শাস্তি এবং ধামাচাপার চেষ্টায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

এবিষয়ে আপোষকারীদের মধ্যে ভূঞাপুর পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান গিয়াস বলেন, আমি ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথমে গেলে তারপর সেখানে পরিস্থিতি বুঝে চলে এসেছি। পরে কি হয়েছে আমি জানি না।

ইসলামী আন্দোলনের ভূঞাপুর উপজেলা আমীর মুফতি আসাদুজ্জামান শামীমের সাথে মুঠোফোনে একাধিক বার চেষ্টা করেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

বলৎকারের ঘটনা সততা স্বিকার করে পৌর ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হারুন আর রশিদ বলেন, বিএনপির নেতৃত্ববৃন্দু ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বসে মীমাংসা করেছি।

এদিকে, এই ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে টাঙ্গাইল জেলা নূরানী শিক্ষক ফাউন্ডেশন। সংগঠনের সভাপতি শেখ মাহদী হাসান শিবলী এক বিবৃতিতে বলেন, "এই বর্বর ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।"

এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম রেজাউল করিম বলেন, "এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"



banner close
banner close