মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের দুই পরিবারের বাড়িতে এক রাতের ব্যবধানে আগুন লেগে প্রায় ১৩ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে গোপীনাথপুর উত্তরপাড়ায় বালাই হালদার ও পরিমল হালদারের বাড়িতে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, রাত আনুমানিক একটার দিকে পরিমল হালদারের বাড়িতে আগুন লাগে। পাশের প্রতিবেশীরা আগুন দেখে দ্রুত এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন এবং ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। ফায়ার সার্ভিসের টিম আগুন নেভাতে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বাকি আগুন নেভায়। আগুন নেভানোর পর এক বাড়ি পার্শ্ববর্তী বালাই হালদারের টিনশেট পাকা ঘরের একটি রুম থেকে ধোঁয়া ওঠতে দেখা যায়। প্রতিবেশীরা জানালার কাচ ভেঙে আগুন নেভাতে সক্ষম হন। এ সময় উভয় বাড়িতেই কেউ বাসায় ছিল না।
প্রত্যক্ষদর্শী ললিতা হালদার বলেন, “আমি রাত একটার দিকে বাইরে বের হয়ে ধোঁয়া দেখে আমার স্বামী ও প্রতিবেশীদের ডেকে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। ফায়ার সার্ভিস এসে পুরো আগুন নেভায়। পরিমল হালদারের বাড়ির একটি ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়েছে। এরপর পাশের বাড়িতেও আগুন লাগে, যা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা হয়।”
ক্ষতিগ্রস্ত পরিমল হালদার জানান, “আমরা সবাই ঢাকায় ডাক্তার দেখানোর জন্য ছিলাম। রাতে খবর পাই বাড়িতে আগুন লেগেছে এবং অনেক সম্পদ পুড়ে গেছে। সকালে এসে দেখি একটি ঘর পুরোপুরি পুড়ে গেছে। এতে আমার প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আগুনের সঠিক কারণ জানি না, তবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে।”
অপর ক্ষতিগ্রস্ত বালাই হালদার বলেন, “আমরা কেউ বাড়িতে ছিলাম না। পরিমল হালদারের বাড়িতে আগুন লেগে, নেভানোর পরেই আমাদের বাড়ির একটি রুমে আগুন লাগে। প্রতিবেশীরা জানালার কাচ ভেঙে আগুন নেভায়। আমরা এখানে হিন্দু-মুসলিম মিলেমিশে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করি। আমার প্রায় তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।”
হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মজিবুর রহমান বলেন, “আমি রাত ৯:৩০টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করেছি। ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কথা বলে ধারণা করছি আগুন বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে লেগেছে।”
হরিরামপুর সিভিল ডিফেন্স ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ শফিকুল ইসলামও বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগার সম্ভাবনা প্রকাশ করেছেন।
দুপুরে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আফরোজা খান রিতার প্রতিনিধি দল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়ে সমবেদনা জানায় এবং আফরোজা খান রিতার পক্ষ থেকে পরিমল হালদারকে ২০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করেন।
জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও গালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিক বিশ্বাস বলেন, “আফরোজা খান রিতা প্রাথমিকভাবে ২০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছেন এবং ভবিষ্যতেও সরকারি সহায়তা পাওয়ার জন্য তাদের পাশে থাকবেন।”
পরিদর্শনে জেলা কৃষক দলের সহ-সভাপতি ভিপি দেলোয়ার হোসেন খান দুলাল, জেলা বিএনপির সাবেক সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মহিউদ্দিন মঞ্জু, বাল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল আলম ভূইয়া তারেক, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী হাসান চৌধুরী হিপু, গোপীনাথপুর ইউনিয়ন বিএনপি'র সভাপতি আবু সাঈদ শিকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:








