শনিবার

২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৫ পৌষ, ১৪৩২

সরাইলে ৪ দফা দাবিতে সিএনজি চালকদের ধর্মঘট, দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি:

প্রকাশিত: ২৭ জুলাই, ২০২৫ ১৭:৪৫

শেয়ার

সরাইলে ৪ দফা দাবিতে সিএনজি চালকদের ধর্মঘট, দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ
ছবি সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি, অতিরিক্ত অর্থ দাবি, বিনা কারণে সিএনজি জব্দ এবং রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত দুর্নীতির প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছেন সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক ও মালিকরা। জেলা সিএনজি চালিত অটোরিকশা পরিবহন মালিক সমিতির আহ্বানে রোববার (২৭ জুলাই) সকাল থেকে এ ধর্মঘট শুরু হয়। এতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এবং দুর্ভোগে পড়েছে কয়েক লাখ মানুষ।

সরাইল উপজেলার বিশ্বরোড চত্বর, সরাইল সদর ও কালিকচ্ছ বাজার এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, ধর্মঘটের কারণে সড়কে অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষ এবং সাধারণ যাত্রীরা পায়ে হেঁটেই গন্তব্যে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

চলমান এইচএসসি পরীক্ষার সময়ে এ ধরনের ধর্মঘটে শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে। পরীক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, “যানবাহন না পেয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছাতে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে, সময়মতো পৌঁছানো নিয়েও উদ্বেগ আছে।”

তবে ধর্মঘটকারীরা দাবি করছেন, পরীক্ষার্থী, রোগী ও জরুরি সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের চলাচলে তারা সহযোগিতা করছেন।

কালিকচ্ছ শ্রমিক ও মালিক সমিতির সভাপতি চন্দন দেব বলেন, “ট্রাফিক পুলিশ অহেতুক আমাদের চালকদের হয়রানি করছে এবং অতিরিক্ত অর্থ দাবি করছে। পূর্বে মাসিকভাবে পুলিশকে নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ দিয়ে চলাচল করলেও এখন তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পুলিশ বিভিন্ন অজুহাতে ৩০০-রও বেশি সিএনজি আটকে রেখেছে। অথচ এ বিষয়ে কোনো সুষ্ঠু সমাধান দিচ্ছে না।”

জেলা শ্রমিক ও মালিক সমিতির প্রচার সম্পাদক মোশারফ হোসেন বলেন, “৫ আগস্টের পর মাসিক ঘুষ আদায়ের পন্থা বন্ধ হয়ে গেলে পুলিশ আইনগতভাবে সহায়তা না করে উল্টো গাড়ি জব্দ করা শুরু করেছে। এ বিষয়ে একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।”

জেলা সিএনজি চালিত অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হেফজুল করিম জানান, “বিনা কারণে চালকদের হয়রানি করা হচ্ছে, মোটা অঙ্কের ঘুষ দাবি করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বৈধ কাগজপত্র সংগ্রহ সম্ভব হচ্ছে না। অথচ সেই অজুহাতে প্রতিনিয়ত গাড়ি আটক করে পুলিশ হয়রানি করছে। এসব অনিয়ম বন্ধে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।”

চালকদের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে:

১. ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি ও ঘুষ আদায় বন্ধ,

২. গাড়ি জব্দের অনিয়ম বন্ধ ও আটককৃত গাড়ি মুক্তি,

৩. রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া পুনরায় চালু,

৪. চালকদের হয়রানি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা।

জেলার নানা স্থানে এই ধর্মঘটের কারণে অফিসগামী, শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী মানুষসহ সাধারণ যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। দ্রুত সমাধান না হলে সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট মহল।



banner close
banner close