রবিবার

২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৬ পৌষ, ১৪৩২

চা কারখানা বন্ধ, কর্ম হাড়ানোর শঙ্কায় শত শত শ্রমিক

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৭ জুলাই, ২০২৫ ১০:৫০

আপডেট: ২৭ জুলাই, ২০২৫ ১১:০২

শেয়ার

চা কারখানা বন্ধ, কর্ম হাড়ানোর শঙ্কায় শত শত শ্রমিক
ছবি সংগৃহীত

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নোয়াপাড়া চা বাগান আজ রুগ্‌ণ বাস্তবতায় জর্জরিত। দীর্ঘদিনের আর্থিক সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে নিজস্ব চা প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা। গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় প্রায় দুই বছর ধরে ঝাঁপ ফেলে আছে কারখানাটি। এ অবস্থায় বাগান বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন আট শতাধিক চা শ্রমিক।

শ্রমিকদের অভিযোগ, বাগানে এখনো সবুজ পাতা তোলা হলেও এগুলো প্রক্রিয়াজাত করার কোনো সুযোগ নেই। তাই বাধ্য হয়ে কাঁচা পাতা বিক্রি করে সীমিত আয়ে চলছে মালিকপক্ষ। কিন্তু এতে শ্রমিকদের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। কারখানা চালু না হলে অচিরেই পুরো বাগানই বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শ্রমিক জানান, এক সময় দেশের প্রথম শ্রেণির চা বাগান হিসেবে নোয়াপাড়ার ব্যাপক সুনাম ছিল। কিন্তু চায়ের বাজারে দাম কমে যাওয়া ও ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণে গত কয়েক বছর ধরে লোকসানে চলছে বাগানটি। মালিকপক্ষ চেষ্টা করেও ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না।

শ্রমিকনেতা খেলু নায়েক জানান, “কারখানা চালু থাকলে কাঁচা পাতার সঠিক মূল্য পাওয়া যেত। এখন শ্রমিকদের ছয় মাসের বেতন বকেয়া। কর্মচারীরাও চার মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। প্রায়ই আমাদের আন্দোলনে যেতে হয়। এভাবে চললে যেকোনো সময় বাগান বন্ধ হয়ে যাবে। তখন শত শত শ্রমিক পথে বসবে।”

মনি সাঁওতাল নামে এক শ্রমিক বলেন, “কারখানা চালু না করলে শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। মালিকপক্ষ যেন দ্রুত প্রয়োজনীয় অর্থায়ন করে কারখানাটি চালু করে।”

নোয়াপাড়া চা বাগানের উপব্যবস্থাপক সোহাগ মাহমুদ বলেন, “কারখানা বন্ধ থাকায় প্রতিবছর বড় অঙ্কের ক্ষতির মুখে পড়ছি। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কারখানাটি আবার চালুর চেষ্টা চলছে।”

বাগানটির ভবিষ্যৎ নিয়ে দিন গুনছেন সংশ্লিষ্ট শ্রমিক-কর্মচারীরা। প্রয়োজনীয় সরকারি সহায়তা না মিললে নোয়াপাড়ার শত বছরের চা ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে পারে যে কোনো সময়।



banner close
banner close