রবিবার

২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৬ পৌষ, ১৪৩২

সিজুর মৃত্যু ঘিরে উত্তাল গাইবান্ধা, স্বজনদের দাবি হত্যা

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:

প্রকাশিত: ২৬ জুলাই, ২০২৫ ২১:৫০

শেয়ার

সিজুর মৃত্যু ঘিরে উত্তাল গাইবান্ধা, স্বজনদের দাবি হত্যা
ছবি সংগৃহীত

গাইবান্ধার সাঘাটা থানায় ঢুকে সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মহসিন আলীকে ছুরিকাঘাতের পর পুকুরে ডুবে মারা যাওয়া যুবক সিজু মিয়ার মৃত্যু নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছে গাইবান্ধা। স্বজনদের দাবি, এটি আত্মহত্যা বা দুর্ঘটনা নয়, বরং এটি একটি ‘পরিকল্পিত হত্যা’।

শনিবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন নিহত সিজুর পরিবার ও এলাকাবাসী। বিক্ষোভে অংশ নেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরাও।

বক্তারা অভিযোগ করেন, ‘সিজুকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছে। তিনি সুস্থ, স্বাভাবিক ও সচেতন যুবক ছিলেন। পানিতে ডুবে তার মৃত্যু অসম্ভব।’ তারা সাঘাটা থানার ওসি বাদশা আলমকে অভিযুক্ত করে অবিলম্বে প্রত্যাহার ও গ্রেফতারের দাবি জানান।

বিকেল সাড়ে ৫টায় শুরু হওয়া মানববন্ধন সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিক্ষোভে রূপ নেয়। উত্তেজিত জনতা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা রাস্তা ছাড়ার নির্দেশ দেয়। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফুল আলম বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। তবে আন্দোলনকারীরা পুলিশ সুপার নিশাত এঞ্জেলার উপস্থিতি দাবি করলে, তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত সিজুর মা ও স্বজনদের কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে কথা বলেন।

এর আগে, শনিবার দুপুরে সিজুর নিজ গ্রাম গিদারীতে জানাজার আগে বক্তব্য দেন গাইবান্ধা জেলা জামায়াতের আমির আব্দুল করিম। তিনি দাবি করেন, সিজু ইসলামী ছাত্রশিবিরের সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার সকালে সাঘাটা হাই স্কুলের পুকুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল সিজুর মরদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে মোবাইল ফোন হারানোর বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে থানায় যান সিজু। প্রয়োজনীয় কাগজ না থাকায় জিডি না নিয়ে ৫০ টাকা দিয়ে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

তবে কিছু সময় পর ছুরি হাতে থানায় ফিরে এসে তিনি এএসআই মহসিন আলীকে মাথা ও হাতে ছুরিকাঘাত করেন এবং থানার পেছনে থাকা পুকুরে ঝাঁপ দেন।

সাঘাটা থানার ওসি বাদশা আলম দাবি করেন, ‘সিজুর মানসিক ভারসাম্যহীনতার লক্ষণ ছিল। তবে তার উদ্দেশ্য কী ছিল, তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে।’

এ ঘটনায় পুলিশ তদন্ত অব্যাহত রাখার কথা জানালেও, স্বজনরা এই ঘটনার নিরপেক্ষ বিচার ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।



banner close
banner close