রবিবার

২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৬ পৌষ, ১৪৩২

প্রশাসনের নাকের ডগায় বাঁশখালী পৌরসভার ময়লার ভাগাড়, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ জনসাধারণ

বাঁশখালী, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ২৪ জুলাই, ২০২৫ ১১:৪৮

শেয়ার

প্রশাসনের নাকের ডগায় বাঁশখালী পৌরসভার ময়লার ভাগাড়, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ জনসাধারণ
ছবি বাংলা এডিশন

চট্টগ্রামের বাঁশখালী পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার চরম অব্যবস্থাপনায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। পৌর সদরের কেন্দ্রস্থল—প্রধান সড়কের পাশে, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের কর্ণার, উপজেলা পরিষদের দক্ষিণাংশ এবং মিয়ার বাজার এলাকায় গড়ে উঠেছে উন্মুক্ত ময়লার ভাগাড়। দিনের পর দিন এখানে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা, কিন্তু নেই কোনো নির্ধারিত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা।

পথচারী, স্কুল শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ—প্রতিনিয়ত দুর্গন্ধ ও নোংরা পরিবেশে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের। ব্যবসায়ীরা জানান, দুর্গন্ধের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

একজন ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ী বলেন, “প্রশাসনের চোখের সামনে এমন নোংরা পরিবেশ! এই কী পৌরসভার পরিকল্পিত নগর ব্যবস্থাপনা?”

বিশেষ করে উপজেলা পরিষদের দক্ষিণ পাশ ঘেঁষে আঞ্চলিক সড়কের ধারে গড়ে ওঠা বর্জ্যের স্তুপ নিয়ে মানুষের দুর্ভোগ চরমে। এই পথ দিয়েই প্রতিদিন শত শত রিকশা, অটোরিকশা, স্কুলগামী শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষ এবং রোগী পরিবহন হয়। দুর্গন্ধ ও ময়লার কারণে এই রাস্তায় চলাচল যেন একপ্রকার ‘স্বাস্থ্যঝুঁকি’ নিয়ে পথ পাড়ি দেওয়ার মতো।

পরিবেশবিদরা জানিয়েছেন, উন্মুক্ত এই ভাগাড় শুধু জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি নয়, বরং বায়ু ও পানিদূষণের মারাত্মক উৎস। দীর্ঘদিন ময়লা না সরানোর ফলে এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পৌর কর্মকর্তা জানান, “বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জানা আছে। কিন্তু তারা দেখেও না দেখার ভান করে চলছে। তাদের অবহেলাতেই আজকের এই পরিবেশ বিপর্যয়।”

এমন অবস্থায় সাধারণ মানুষের প্রশ্ন-“পৌর প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কি এতটুকু দায়িত্ববোধ নেই? প্রধান সড়কের মতো স্পর্শকাতর এলাকায় দিনের পর দিন ময়লার স্তূপ পড়ে থাকতে পারে কীভাবে?”

এ বিষয়ে বাঁশখালী পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব) তৌহিদুল ইসলাম প্রতিবেদককে বলেন,

“ময়লার স্তূপ সম্পর্কে আমরা অবগত। আমাদের গাড়িটি আকারে বড় হওয়ায় প্রধান সড়কে দাঁড়িয়ে ময়লা তোলা সম্ভব হয় না। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে ময়লা অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

তবে পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সংখ্যা বা ময়লা রাখার জন্য বড় কোনো কন্টেইনার না থাকার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য তিনি দিতে পারেননি।

এদিকে, সচেতন মহল বলছেন—এখনই সময়। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে। তাদের মত, “নির্ধারিত স্থানে আধুনিক পদ্ধতিতে ময়লা ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নিতে হবে। নিয়মিত পরিস্কার, কন্টেইনার স্থাপন ও পরিবেশবান্ধব পদক্ষেপ ছাড়া এই সংকট নিরসন সম্ভব নয়। নয়তো বাঁশখালী পৌরবাসীকে শিগগিরই জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশগত বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হবে।”



banner close
banner close