কক্সবাজার সদর মডেল থানার পাশেই অবস্থিত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কেন্দ্রীয় মহাশ্মশান। কিন্তু এই পবিত্র স্থানটি এখন মাদকসেবী ও ছিনতাইকারীদের ডেরায় পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রাত নামলেই শ্মশানের নীরবতা ভেঙে সেখানে বসে মাদকের আড্ডা, জুয়ার আসর ও চলে ছিনতাইকৃত মালপত্র ভাগ-বাটোয়ারা। দিনের বেলায় যেখানে মরদেহের সৎকার করা হয়, রাত হলেই সেখানে চলে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য।
কক্সবাজার হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য এটি শহরের একমাত্র সৎকার কেন্দ্র হলেও, এর পবিত্রতা ও নিরাপত্তা আজ হুমকির মুখে। স্থানীয়রা জানান, মাদকসেবীরা দীর্ঘদিন ধরে শ্মশানের নির্জনতা ব্যবহার করছে সেবন ও বিক্রির কাজে। পাশাপাশি এখানে প্রায় প্রতিরাতেই জুয়া খেলার অভিযোগ রয়েছে।
শ্মশান পরিচালনা কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, অপরাধীদের বাধা দিতে গেলে তারা ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। ফলে প্রহরীরা এবং তত্ত্বাবধায়করা চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।
কমিটির কার্যকরী সভাপতি দীপক শর্মা দীপু জানান, “আমাদের প্রহরীদের একাধিকবার মারধর করেছে এই অপরাধীরা। আমরা তাদের সঙ্গে আর পেরে উঠছি না।”
শ্মশানঘেঁষে প্রবাহিত বাঁকখালী নদীর তীরও অপরাধীদের নিরাপদ চলাচলের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশেষ করে ভাটার সময় নদী পার হয়ে পথচারীদের ধরে এনে শ্মশানের ভেতরে ছিনতাই করা হয়। এমনকি শ্মশান উন্নয়নের জন্য রাখা নির্মাণ সামগ্রীও রক্ষা পাচ্ছে না। রড, ইট, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম এমনকি দানবাক্স পর্যন্ত চুরি হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়া, বৈদ্যুতিক তার চুরি করে শ্মশানের ভেতর পুড়িয়ে তামা সংগ্রহ করা হয়। এতে যেমন পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, তেমনি জাতীয় সম্পদের অপচয়ও ঘটছে। এসব কাজে বাধা দিতে গিয়ে একাধিকবার পাহারাদাররা আহত হয়েছেন বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে একাধিকবার লিখিত ও মৌখিকভাবে জানানো হলেও এখনো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইলিয়াস খান জানান, “নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আরও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।”
শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত একটি ধর্মীয় পবিত্র স্থানে এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চলতে থাকায় হিন্দু সম্প্রদায় ও নাগরিক সমাজে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে।
আরও পড়ুন:








