ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর আগুনে দগ্ধ হয়ে বোন নাজিয়া তাবাসসুম নিঝুমের মৃত্যুর পর না ফেরার দেশে চলে গেলেন ছোট ভাই আরিয়া নাশরাফ নাফি। দুই ভাই-বোনের অকাল মৃত্যুতে পরিবারসহ তাদের গ্রামের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নাজিয়া তাবাসসুম নিঝুম ছিল মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ও তার ছোট ভাই আরিয়া নাশরাফ নাফি ছিল ওই একই স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। ভোলার দৌলতখান উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের দক্ষিণ জয়নগর গ্রামের নুর মিয়ার হাট সংলগ্ন চান কাজী বাড়ির অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আশরাফুল ইসলাম নীরব ও তাহমিনা দম্পতির সন্তান তারা। তাদের দুজনকে ঢাকার উত্তরার কামারপাড়ার একটি কবরস্থানে পাশাপাশি দাফন করা হয়েছে। দুই সন্তানের মৃত্যুতে নিঃসন্তান হয়ে গেলেন নীরব-তাহমিনা দম্পতি।
গত সোমবার দুপুরে স্কুল চত্বরে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে লাগা আগুনে তাদের দুজনের শরীরের ৯০ ও ৯৫ শতাংশ দগ্ধ হয়। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে মৃত্যুবরণ করে বোন নিঝুম। পরবর্তীতে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে আইসিইউতে মৃত্যুবরণ করে ভাই নাফি।
আগে তার সন্তানদের উন্নত ভবিষ্যতের আশায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঢাকায় পাড়ি জমান। থাকতেন উত্তরায়। একে একে দুই সন্তানকে ভর্তি করান উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। সর্বশেষ ২০২২ সালে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন তারা। গত সোমবার দুপুরে প্রশিক্ষণ বিমানটি বিশ্বস্ত হলে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মতো অগ্নিদগ্ধ হন নিঝুম ও নাফি। এ সময় তাদের দুজনের শরীরের ৯০ ও ৯৫ ভাগ দগ্ধ হলে তাদেরকে উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রথমে বোন নিঝুমের মৃত্যু হয় ও পরে মৃত্যু হয় ভাই নাফির।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিঝুম ও নাফির চাচা মো. হাসান বলেন, বিমান দুর্ঘটনায় আমার ভাই-ভাবি নিঃসন্তান হয়ে গেল। নিঝুম ও নাফি দুজনই অনেক মেধাবী ছিল। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নিঝুমকে উত্তরার কামারপাড়ার একটি কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে তার ভাই নাফি। পরবর্তীতে বুধবার দুপুরে নাফিকে তার বোনের পাশে একই কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। একই সাথে দুই সন্তান হারিয়ে আমাদের পুরো পরিবার শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:








