রবিবার

২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৬ পৌষ, ১৪৩২

টিকটকে পরিচয় প্রেম, বিয়ের পর কলহ, ঘুমন্ত স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা

চাঁদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১ জুলাই, ২০২৫ ১৪:৩৯

শেয়ার

টিকটকে পরিচয় প্রেম, বিয়ের পর কলহ, ঘুমন্ত স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা
ছবি সংগৃহীত

টিকটকে পরিচয়, প্রেম, অতঃপর বিয়ে—শেষতক তা গড়ায় ভয়াবহ পরিণতির দিকে। চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ফাতেমা বেগম রূপালী (৩৬) নামে এক নারী স্বামী মো. জামাল গাজীর (৩৮) হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন।

সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে চাঁদপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব এসব তথ্য জানান।

নিহত রূপালী উপজেলার দক্ষিণ ঘোড়াধারী গ্রামের কালু পাটওয়ারীর মেয়ে। অভিযুক্ত জামাল পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি গেড়ামধন গ্রামের মো. মোস্তফা গাজীর ছেলে।

পুলিশ জানায়, প্রায় ১১ মাস আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটকে রূপালীর সঙ্গে জামালের পরিচয় হয়। পরিচয়ের সময় রূপালী নিজেকে কোর্ট পিপি’র সহকারী হিসেবে পরিচয় দিলেও প্রকৃতপক্ষে তিনি একজন গার্মেন্টকর্মী।

পরিচয়ের সূত্র ধরে তারা ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়ান এবং কক্সবাজার ও সিলেটে ভ্রমণ করেন। ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে ঢাকার সদরঘাট এলাকায় ৩ লাখ টাকা কাবিনে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। জামালের এটি ছিল তৃতীয় ও রূপালীর পঞ্চম বিয়ে।

বিয়ের পর জামাল একমাস রূপালীর বাবার বাড়িতে থাকলেও পরবর্তীতে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। জামালের আগের স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ এবং অর্থ লেনদেনকে কেন্দ্র করে রূপালী সন্দেহপ্রবণ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে জামাল ১১ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও ৩৬ হাজার টাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জে চলে যান।

পরবর্তীতে রূপালী স্বজনদের সহায়তায় জামালকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন এবং স্বর্ণালঙ্কার আদায় করলেও টাকা ফেরত পাননি। এ নিয়ে নতুন করে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। রূপালী কয়েকদিন জামালকে খাবার না দিয়ে মারধরও করেন বলে জানা যায়।

গত ১১ জুলাই রাত আনুমানিক ৩টার দিকে ঘুমন্ত রূপালীর ওপর জামাল ধারালো দা দিয়ে গলায় ও মাথায় আঘাত করে হত্যা করে। পরে মৃতদেহ টেনে নিয়ে গিয়ে টয়লেটের ট্যাংকির মধ্যে ফেলে রেখে জামাল পালিয়ে যায়।

ঘটনার দিন নিহতের ছেলে টিপু পাটওয়ারী বাদী হয়ে মতলব দক্ষিণ থানায় জামালকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার পর পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. লুৎফুর রহমানের তত্ত্বাবধানে একটি বিশেষ টিম গঠন করে অভিযানে নামে।

পুলিশ একাধিক জেলায় অভিযান চালিয়ে অবশেষে ২০ জুলাই কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার বৃত্তিপাড়া বাজার এলাকা থেকে জামাল গাজীকে গ্রেপ্তার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জামাল স্ত্রী হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।



banner close
banner close