রবিবার

২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৬ পৌষ, ১৪৩২

পায়রা বন্দর হবে অর্থনৈতিক করিডোর: উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত

কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:

প্রকাশিত: ২০ জুলাই, ২০২৫ ১৮:০৯

শেয়ার

পায়রা বন্দর হবে অর্থনৈতিক করিডোর: উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত
ছবি বাংলা এডিশন

নৌপরিবহন ও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, “পায়রা বন্দরকে এ অঞ্চলের জন্য টেকসই ও কার্যকরভাবে গড়ে তুলতে হবে।” তিনি বলেন, “বাংলাদেশের প্রতিটি বন্দরেই নিয়মিত ড্রেজিং প্রয়োজন হয়। তাই নিজস্ব ড্রেজার থাকা অত্যন্ত জরুরি। আশা করছি, আগামী এক-দুই মাসের মধ্যেই পায়রা বন্দরের নিজস্ব ড্রেজার ও একটি পূর্ণাঙ্গ ড্রেজিং সেকশন চালু করা সম্ভব হবে।”

রবিবার (২০ জুলাই) দুপুরে কুয়াকাটার একটি হোটেলে ‘পায়রা বন্দরের মাস্টারপ্ল্যান’ সংক্রান্ত অনুষ্ঠানের পর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “একটি বন্দর স্থাপন করে তা পূর্ণ কার্যকারিতায় পৌঁছাতে সাধারণত ২০ থেকে ২৫ বছর সময় লাগে। সেই দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নিয়েই আমাদের অগ্রসর হতে হবে।”

পায়রা বন্দরের ভৌগোলিক ও কৌশলগত গুরুত্ব তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, “এই বন্দরটি একটি সরলরৈখিক ও প্রশস্ত চ্যানেলবিশিষ্ট সুবিধাজনক স্থানে অবস্থিত। এর মাধ্যমে দেশের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে বহুমুখী সংযোগ স্থাপন করে একে একটি সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক করিডোরে পরিণত করা সম্ভব।”

বর্তমানে দেশের ৯৩ শতাংশ আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চট্টগ্রাম বন্দরনির্ভরভাবে পরিচালিত হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, “শিল্পায়ন ও রপ্তানি খাতের দ্রুত সম্প্রসারণের ফলে ২০৫০ সাল নাগাদ দেশের বৈদেশিক বাণিজ্য প্রায় দ্বিগুণ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে পায়রা বন্দরের গুরুত্ব বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।”

উপদেষ্টা আরও বলেন, “নতুন বন্দর গঠনের আলোচনা কিংবা কোনো বন্দর অপারেটর নিয়োগের প্রসঙ্গ উঠলেই দেশে অযথা বিভ্রান্তি তৈরি হয়—যা বাস্তবভিত্তিক উন্নয়নচিন্তার পথে অন্তরায়। এসব মানসিকতা থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের দীর্ঘমেয়াদি, টেকসই ও বাস্তবসম্মত পরিকল্পনার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন পায়রা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাসুদ ইকবাল, মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্পের বুয়েট প্রতিনিধি অধ্যাপক ড. ইশতিয়াক আহম্মেদ এবং আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান রয়্যাল হাসকোনিং ডিএইচভি (নেদারল্যান্ডস)-এর টিম লিডার মেনো মুইজ।

অনুষ্ঠানে বন্দরের কর্মকর্তা, সামরিক-বেসামরিক প্রতিনিধি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের লক্ষ্যে বুয়েটের বিআরটিসি এবং রয়্যাল হাসকোনিং ডিএইচভির সঙ্গে চুক্তি করে। ছয় বছর ধরে চলা কঠোর পরিশ্রমের পর মাস্টারপ্ল্যানটি চূড়ান্ত করা হয়, যাতে ১৯টি প্রধান উপাদান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে—সংরক্ষণ, বন্দর ব্যবস্থাপনা, ঢেউ পরিস্থিতি, নাব্যতা, ড্রেজিং ও ইউটিলিটি সংযোগসহ।



banner close
banner close