নাটোরের বাগাতিপাড়ায় তমালতলা থেকে পকেটখালি পর্যন্ত বাস্তবায়নাধীন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় কৃষকদের দাবি, তাদের ফসলি জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে, বিনিময়ে দেওয়া হয়নি কোনো ক্ষতিপূরণ বা পূর্বানুমতি।
জানা গেছে, সড়কটির দৈর্ঘ্য ১০ কিলোমিটার। উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, প্রকল্পের জন্য মোট বরাদ্দ রয়েছে ১৭ কোটি ২০ লাখ ১৫ হাজার ৮৬১ টাকা, যার মধ্যে শুধু মাটি কাটা, পরিবহন ও ভরাট বাবদ বরাদ্দ রয়েছে প্রায় ৮২ লাখ টাকা।
এই প্রকল্পের কার্যাদেশ পেয়েছে যশোরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘জাকাউল্লা অ্যান্ড ব্রাদার্স’। তবে স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রকল্পের কাজ বাস্তবে পরিচালনা করছে নাটোরের ‘আসিফ এন্টারপ্রাইজ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এ বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের একজন জানান, “আমার জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে। কেউ আমাকে কিছু বলেনি। কোনো টাকাও পাইনি।”
এমন অভিযোগ শুধু একজনের নয়, একাধিক কৃষক জানিয়েছেন একই অভিজ্ঞতার কথা। তাঁদের ভাষায়, স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও ঠিকাদারের যোগসাজশে মাটি কাটা হয়েছে, যা বেআইনি এবং অন্যায়।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর রাজশাহী কার্যালয়ের একটি দল সরেজমিনে প্রকল্প এলাকায় অভিযান চালায়। তারা নির্মাণাধীন রাস্তা ঘুরে দেখেন এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন।
রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের, দুদকের সহকারী পরিচালক তানভির আহম্মেদ সিদ্দিক বলেন, “অভিযানে আমরা কিছু অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি। ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা, নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের আলামত পাওয়া গেছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে এবং বিষয়টি কমিশনে প্রতিবেদন আকারে পাঠানো হবে।”
এমন ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। তাঁরা বলছেন, “উন্নয়নের নামে কৃষকের জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে—এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। প্রশাসনের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।”
আরও পড়ুন:








