নোয়াখালীতে টানা বৃষ্টিতে বেড়েছে জলাবদ্ধতা, চরম দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার বিভিন্ন উপজেলার হাজারো মানুষ। বিশেষ করে সদর, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ ও বেগমগঞ্জ উপজেলার গ্রামীণ সড়কগুলো এখনো পানির নিচে। অনেক বাড়ির আঙিনায় হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি জমে থাকায় স্থানীয়রা কার্যত গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন।
বৃষ্টির পানিতে পুকুর-নালার পানি মিশে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতে না পেরে অনেকেই অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন।
কৃষি খাতেও নেমে এসেছে বিপর্যয়। জলাবদ্ধতায় আমনের বীজতলা, আউশের ক্ষেত এবং গ্রীষ্ম-শরৎকালীন শাকসবজির জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে গাছের গোড়া পচা, পোকামাকড় ও নানা রোগবালাই ছড়িয়ে পড়ছে। কৃষকরা জানিয়েছেন, বাজারে আমন বীজের দাম অনেক বেড়ে গেছে, ফলে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তাদের পড়তে হচ্ছে বড় ধরনের লোকসানের মুখে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ জুলাই থেকে নোয়াখালীতে শুরু হওয়া টানা মুষলধারে বৃষ্টিতে জেলার ছয়টি উপজেলার অন্তত ৫৭টি ইউনিয়নে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ৫২ হাজার মানুষ। পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন ১৮ হাজার পরিবার। এছাড়া সেনবাগ, কবিরহাট ও সুবর্ণচর উপজেলায় আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৭টি বসতঘর এবং সুবর্ণচরে একটি ঘর সম্পূর্ণভাবে ধসে পড়েছে।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ জানান, ‘নোয়াখালীতে আমরা জলাবদ্ধতা নিরসনে দিনরাত কাজ করছি। এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ২৬০ হেক্টর ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ৪০ হাজার মৎস্য খামারির মাছের ঘের ভেসে গেছে। আমরা ৯৮৪ প্যাকেট শুকনা খাবার, ১৬ মেট্রিক টন চাল ও ৬ লাখ টাকা বিতরণ করেছি। আরও ১ হাজার ৮২০ প্যাকেট শুকননো খাবার, ৪৮৪ টন চাল ও ১২ লাখ টাকা মজুদ রয়েছে। আমাদের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।’
আরও পড়ুন:








