ঝিনাইদহ শহরের কেপি বসু সড়কে ‘রেখা বস্ত্র বিতান’-এর মালিক সুনীল জোয়ার্দারের একমাত্র ছেলে সুদীপ জোয়ার্দারের আত্মহত্যা ঘিরে তৈরি হয়েছে রহস্যের আবহ। এই মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তার বন্ধুমহল ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। তাদের দাবি, আত্মহত্যা নয়, এর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে চলছে শোক ও সমালোচনার ঢেউ। প্রায় ২০-২২ বছর আগে মাকে হারানো সুদীপ সৎ মায়ের সংসারে বেড়ে ওঠে। অনেকে মনে করছেন, পরিবারের অবহেলা ও সম্পর্কের জটিলতাই হয়তো তাকে এমন পরিণতির দিকে ঠেলে দিয়েছে।
পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, সুদীপ কিছুদিন ধরে জটিল কিছু শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন এবং সে সঠিক চিকিৎসাও পাচ্ছিল না। অন্যদিকে, তার বাবা সুনীল দ্বিতীয়বার বিয়ে করার পর নতুন সংসারে সিলন জোয়ার্দার নামে এক ছেলে রয়েছে। একে ঘিরে পারিবারিক বৈষম্য নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
জানা গেছে, গত শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে তিনতলা ভবনের নিজ বাসার একটি কক্ষে গলায় গামছা পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যানে ঝুলে পড়েন সুদীপ। তার চাচা স্বপন জোয়ার্দার একই ফ্লোরে থাকা মেয়েকে খাবারের জন্য ডাকতে গিয়ে এই দৃশ্য দেখেন। এরপর দ্রুত পরিবারের অন্যদের সহায়তায় সুদীপকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রোববার দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়। সেখানে উপস্থিত একাধিক শুভাকাঙ্ক্ষী জানান, সুদীপ একজন বিনয়ী, ভদ্র এবং শান্ত প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। আত্মহত্যার মতো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তিনি নেবেন—এমন ধারণা তাদের ছিল না। ফলে তারা আত্মহত্যার পেছনে প্ররোচনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না এবং সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন।
তবে সুদীপের সৎ ভাই সিলন জোয়ার্দার গণমাধ্যমের সামনে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। অপরদিকে, চাচা স্বপন জোয়ার্দার দীর্ঘ সময় সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হলেও সুদীপের আত্মহত্যার কোনো সুস্পষ্ট কারণ জানাতে পারেননি।
সুদীপের রহস্যময় মৃত্যু ঘিরে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে তার পারিবারিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট। স্থানীয়রা এই ঘটনায় প্রকৃত সত্য উদঘাটনের জন্য প্রশাসনের সুষ্ঠু তদন্ত কামনা করেছেন।
আরও পড়ুন:








