টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার বাহাদীপুর গ্রামে মাদকবিরোধী অভিযানের আড়ালে ঘুষ দাবি ও নগদ টাকা লুটপাটের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি টিমের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ছালেহা বেগম (৫৭) এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে।
ছালেহা বেগম উপজেলার বাহাদীপুর গ্রামের বাহাদীপুর গ্রামের বাহাদীপুর গ্রামের রাজ্জাক তালুকদারের স্ত্রী ও ভূঞাপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর।
ছালেহা বেগমের অভিযোগপত্রে বলা হয়, গত ১৮ জুন ২০২৫ খ্রিঃ সকাল ১০টার দিকে টাঙ্গাইল জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ৮ থেকে ১০ জন কর্মকর্তা তার বাড়িতে মাদক উদ্ধারের নামে অভিযান চালান। অভিযানে অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন- মোঃ সিরাজুল ইসলাম, মোঃ শামীম, মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, মোঃ জিয়াউর রহমান, প্রবাল চন্দ্র সরকার, মোঃ ফরহাদ আলী, মোঃ আল-মামুন ও সুমাইয়া আক্তার প্রমুখ।
অভিযোগে আরও বলা হয়, অভিযানে কোনো মাদকদ্রব্য না পেয়ে কর্মকর্তারা ‘তেল খরচ’ বাবদ প্রথমে ২০,০০০ টাকা দাবি করেন। পরে ছালেহা বেগম ১০,০০০ টাকা প্রদান করলে তারা চলে যান, তবে মোবাইল ফোনে বাকি টাকা পাঠাতে বলেন। প্রায় ৫ মিনিট পর আবারো তারা ফিরে এসে ঘরের প্রতিটি কক্ষে প্রবেশ করেন এবং আসবাবপত্র তছনছ করেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, অভিযানের সময় কর্মকর্তারা তার আলমারির তালা খুলিয়ে সেখান থেকে নগদ ৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা নিয়ে নেন। এরপর তার ছেলের ঘরে ঢুকে আলমারির ড্রয়ার থেকে আরও ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে যান। এই পুরো ঘটনাক্রমে তারা ভুক্তভোগী এবং তার ছেলের স্ত্রীর ওপর ভয়ভীতি ও হুমকি প্রয়োগ করেন, এমনকি জবানবন্দির ভিডিওও রেকর্ড করেন।
সব মিলিয়ে অভিযানে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা মোট ৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকা নিয়ে দুপুর ১টার দিকে স্থান ত্যাগ করেন বলে ছালেহা বেগম দাবি করেন।
ঘটনার দিনই ছালেহা বেগম ভূঞাপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন এবং পরেরদিন (১৯ জুন) উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছেও বিষয়টি অবহিত করেন। তবে এ পর্যন্ত কোনো বিচার বা পদক্ষেপ না পাওয়ায়, তিনি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে বিচার প্রার্থনা করেছেন।
স্থানীয় সুমা আক্তার, লাল মিয়া ও আব্দুল মান্নান বলেন, অভিযান চলার সময় আমরা ভিতরে প্রবেশ করতে চাইলে বাধা দেয় পরে অভিযান শেষে আমাদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেন অভিযানের বিষয়ে ভিতরে কি হয়েছে তা বলতে পারবো না।
অভিযান রয়েছে এর আগেও গত ফেব্রুয়ারি মাসে উপজেলার বাহাদিপুর গ্রামের প্রতিবন্ধী মালেকের বাড়িতে অভিযান চালায় টাঙ্গাইল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর একই কায়দায়।
প্রতিবন্ধী মালেক বলেন, আমার মায়ের ৫টি ছাগল ও কিছু ধান বিক্রির প্রায় ৪০ হাজার টাকা তারা লুট করে নিয়ে যায়। আমি ঊর্ধ্বতন প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই আমার মায়ের কষ্টের অর্জিত টাকা যেন ফেরত পায়।
এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালক একেএম শওকত ইসলাম বলেন, আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন:








