সোমবার

২২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৭ পৌষ, ১৪৩২

স্ত্রীর স্বীকৃতি চান প্রেমিকা, অধ্যক্ষের বাড়িতে অনশন

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৫ জুলাই, ২০২৫ ১৭:০৩

শেয়ার

স্ত্রীর স্বীকৃতি চান প্রেমিকা, অধ্যক্ষের বাড়িতে অনশন
ছবি বাংলা এডিশন

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও স্ত্রী স্বীকৃতি না দেওয়ার অভিযোগ এনে তার বাড়িতে অনশন করেছেন সাবিনা ইয়াসমিন (২৩) নামের এক তরুণী। “রাজ্জাক আমার সব, ওকে ছাড়া বাঁচবো না”—এমন কথা বলে তিনি দাবি করেন, বিয়ে ও সংসার জীবনের পর তাকে ডিভোর্স দিয়ে অবহেলা করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী তরুণী সাবিনা ইয়াসমিন উপজেলার ধুকুরিয়াবেড়া ইউনিয়নের পিড়ার চর গ্রামের ফুলজার হোসেনের মেয়ে। তিনি লাইট হাউজ টেকনিক্যাল বিএম কলেজের সাবেক ছাত্রী ও পরে একই প্রতিষ্ঠানে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি করেন। অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক একই ইউনিয়নের ধুকুরিয়াবেড়া গ্রামের মনিরুজ্জামানের ছেলে।

সাবিনা ইয়াসমিন জানান, ২০২০ সালে কলেজে অধ্যয়নকালীন অধ্যক্ষ রাজ্জাকের সঙ্গে পরিচয় হয়। রাজ্জাক তাকে চাকরির আশ্বাস দিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেন। যদিও তখন তিনি জানতেন অধ্যক্ষের আগে থেকেই একটি সংসার রয়েছে। কিছুদিন ঢাকায় অবস্থানের সময় তাদের মধ্যে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয় এবং ২০২৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর তারা ঢাকায় গোপনে বিয়ে করেন। কাবিননামায় ৬ লাখ টাকা ধার্য করা হয় এবং চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে আরও ১১ লাখ টাকা আদায় করেন রাজ্জাক।

তিনি আরও জানান, বিয়ের দেড় বছর পর তাদের কন্যাসন্তান জন্ম নেয়, তবে নবজাতক মারা যায়। এরপর রাজ্জাকের প্রথম স্ত্রীর চাপে চাকরিতে সমস্যা দেখা দেয় এবং পরে তাকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে সম্পর্কের ইতি টানেন।

সাবিনা বলেন, “আমি ওকে ভালোবেসে বিয়ে করেছি। এখন প্রতারণা করে পালিয়ে গেছে। আমি স্ত্রীর স্বীকৃতি চাই। তা না হলে আত্মহত্যা ছাড়া উপায় থাকবে না।” গত ১ জুলাই তিনি রাজ্জাকের বাড়িতে অনশন শুরু করলে পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যান। ৪ জুলাই স্থানীয়দের অনুরোধে তিনি নিজ বাড়িতে ফিরে যান।

সাবিনার মা বলেন, “আমার মেয়েকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি, চাকরি ও টাকার লোভ দেখিয়ে ব্যবহার করেছে রাজ্জাক। এখন সে আমাদের মেয়েকে স্বীকৃতি দিচ্ছে না, এটা অন্যায়। আমরা তার ন্যায্য অধিকার চাই।”

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকেরিয়া হোসেন বলেন, “অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক তরুণীকে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়ে বিয়ে করেছেন এবং পরে ডিভোর্স দিয়েছেন। বিষয়টি প্রতারণার শামিল। আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”



banner close
banner close