সরকারবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের নামে দায়ের করা মামলার বাদী তিতুমীর কলেজের অধ্যাপক মালেকা আখতার বানুকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় জেলাজুড়ে ছাত্র ও সচেতন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে ব্যাপক সমালোচনা, প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতারা।
গত ২ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে মালেকা আখতার বানুকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। অথচ তিনি ২০২৩ সালের ২৫ জুলাই ঢাকার তিতুমীর কলেজে অনুষ্ঠিত ‘জুলাই আন্দোলন’-এর সময় অজ্ঞাতনামা ৫০০ থেকে ৭০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নাশকতা ও ভাঙচুরের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছিলেন, যা সে সময় ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয়।
বিক্ষুব্ধ ছাত্রনেতারা বলছেন, ওই ঘটনায় অনেক নিরীহ শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হন, অথচ সেই মামলার বাদীকেই পুরস্কৃত করা হলো অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দিয়ে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি বায়জিদুর রহমান সিয়াম বলেন, “স্বৈরাচারের দোসর এমন একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে এই জেলার মাটিতে পা রাখতে দেওয়া হবে না। আমরা তার নিয়োগ বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি ও অবরোধ কর্মসূচি পালিত হবে।”
জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সমির চক্রবর্তী বলেন, “৭০০ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ ধ্বংস করতে চাওয়া শিক্ষককে পুরস্কৃত করা দুঃখজনক। আমরা তাকে কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে মানি না। বরখাস্তের দাবি জানাই।”
জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি হাসান মাহমুদ বলেন, “যারা শহীদ হয়েছে, তাদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করে ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা করছেন মালেকা। অবিলম্বে তার পদোন্নতি বাতিল করতে হবে।”
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, “যাদের নামও বলা হয়নি, তাদের বিরুদ্ধেও মামলা দিয়ে এখন কলেজ চালাতে আসছেন? ব্রাহ্মণবাড়িয়া এই অন্যায় মেনে নেবে না। রাজপথেই জবাব দেওয়া হবে।”
সম্মিলিত ছাত্রসমাজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “ওয়াসিম, মুগ্ধসহ শহীদদের রক্তে যাদের হাত রঞ্জিত, তাদের দিয়ে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা হতে পারে না। যদি নিয়োগ বাতিল না হয়, তাহলে দুর্বার ছাত্রআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”
এ ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে শিক্ষাঙ্গনে উত্তেজনা ও অস্থিরতা বাড়ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র।
আরও পড়ুন:








