“আওয়ামী লীগের এমন একটি মেশিন ছিল, যেখানে রাজাকার ঢুকলে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে বের হতো। আবার কখনো কখনো সেই মেশিনে ঢুকে মুক্তিযোদ্ধারাও রাজাকার হয়ে যেত”—জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোসলেম উদ্দিনের এমন বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার ঝড় উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) গাইবান্ধা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের জেলা কাউন্সিল-পূর্ব আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মোসলেম উদ্দিন বলেন, “মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি আদর্শের লড়াই। অথচ এখন দলীয় স্বার্থে এই যুদ্ধকে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা আজ প্রশাসন ও রাজনীতিতে অবহেলিত, আর যাদের কোনো ত্যাগ নেই, তারাই মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়ে সুযোগ নিচ্ছে। এটা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক।”
তিনি বলেন, “যারা সাড়ে ১৬ বছর ভারতের কথায় দেশ চালিয়েছে, তারা প্রকৃতপক্ষে ‘ভারতীয় রাজাকার’। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে যারা আপস করে, তারা কোনোভাবেই মুক্তিযোদ্ধার চেতনা ধারণ করতে পারে না।”
বর্তমান সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিভক্তি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, “দলীয় পরিচয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে। নতুন প্রজন্ম যেন বিভ্রান্ত না হয়, সে জন্য সঠিক ইতিহাস জানানো এখন সময়ের দাবি।”
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন গাইবান্ধা জেলা শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আমীন সরদার।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আব্দুল করিম সরকার, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও রংপুর অঞ্চলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়ারেছ, জেলা উপদেষ্টা ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাজেদুর রহমান।
এছাড়াও বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ সবুর, আব্দুল জলিল তোতা, আব্দুল লতিফ মণ্ডলসহ আরও অনেকে। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
আলোচনা সভা শেষে মো. নুরুল আমীন সরদারকে সভাপতি ও আব্দুস সবুর সরকারকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৫ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের গাইবান্ধা জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন:








