সোমবার

২২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৭ পৌষ, ১৪৩২

রায়গঞ্জে আরডিওর বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে গুদামে ধান সরবরাহের অভিযোগ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২ জুলাই, ২০২৫ ১৭:৫১

শেয়ার

রায়গঞ্জে আরডিওর বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে গুদামে ধান সরবরাহের অভিযোগ
ছবি বাংলা এডিশন

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা (আরডিও) মো. শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহে দপ্তরীয় প্রভাব ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি দরিদ্র ও প্রকৃত কৃষকদের প্রাপ্য সুযোগ কেড়ে নিয়ে নিজের পরিচিতদের নামে গুদামে ধান ঢুকিয়েছেন।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, আরডিও শফিকুল ইসলাম তার নিজ এলাকা উল্লাপাড়ার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ধান কিনে রায়গঞ্জ খাদ্য গুদামে সরবরাহ করেন। এ কাজে তাকে সহায়তা করেন পল্লী উন্নয়ন অফিসের পরিদর্শক লুৎফর রহমান ও অফিস সহায়ক আবুল কালাম। তাদের পরিবারের সদস্যদের কৃষি কার্ড ব্যবহার করে সরকারি গুদামে প্রায় ২৪৯ মন ধান সরবরাহ করা হয়।

খাদ্য গুদাম সূত্রে জানা যায়, ধান সরবরাহে ব্যবহৃত হয় লুৎফরের পিতা সিরাজুল ইসলাম, চাচাতো ভাই মুজাম হোসেন এবং আবুল কালামের ভাই আসাদুল ইসলামের নাম। তবে এই ব্যক্তিরা জানান, তারা নিজেরা কোনো ধান দেননি, বরং তাদের অজ্ঞাতসারে এসব ব্যবহার করা হয়েছে।

বুলাকীপুর গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, “আমি ধান দিইনি, দামও পাইনি। শুনেছি, লুৎফরের কাছেই টাকাগুলো আছে।” মুজাম হোসেন জানান, “ব্যাংকে গিয়ে শুধু স্বাক্ষর দিয়েছি। অনলাইনে আবেদন বা অন্য কোনো কার্যক্রমে অংশ নেই।”

অফিস সহায়ক আবুল কালাম বলেন, “আমার ভাই ধান দেবে বলেছিল, আমি বিষয়টি স্যারকে জানিয়েছিলাম। এরপর কী করেছে, বলতে পারি না।” তবে আসাদুল ইসলামের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করেন, অনলাইনে আবেদন করেও প্রকৃত কৃষকরা গুদামে ধান দিতে পারেননি, অথচ কোনো আবেদন ছাড়াই বাইরের লোকদের নামে গুদামে ধান সরবরাহ করা হয়েছে। তারা দোষীদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও শাস্তির দাবি জানান।

ওই অফিসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “স্যারের নির্দেশেই নির্দিষ্ট কিছু লোকের কাছ থেকে ধান নিয়ে গুদামে ঢোকানো হয়েছে।”

আরডিও শফিকুল ইসলাম প্রথমে জানান, “দুই কর্মচারীর অনুরোধে গুদাম কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল, আমি নিজে ধান বিক্রি করিনি।” পরে যোগাযোগ করা হলে বলেন, “আপনারা যা পারেন করেন।”

চান্দাইকোনা এলএসডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, “ওরা বড় অফিসার, আমরা ছোট। তাদের মান ক্ষুণ্ন করবেন না।” উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. সিরাজুল হক সরকার বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই।”

রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, “অভিযোগ গুরুত্বসহকারে পর্যবেক্ষণ করছি। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”



banner close
banner close