লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার পূর্ব সিন্দুর্ণা গ্রামের যুবক নাহিদ হাসান বাবু (২৬) আট বছর পর জামিনে মুক্ত হলেও এখনও গায়ে লেগে আছে ‘জঙ্গি’ তকমা। ২০১৬ সালের শেষদিকে তাকে গ্রেপ্তার করে একটি ‘জঙ্গি সংশ্লিষ্ট’ মামলায় ৪৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি, এটি একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা মামলা।
নাহিদ ২০১৪ সালে এসএসসি এবং ২০১৬ সালে এইচএসসি পাস করেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি স্থানীয় একটি ফার্মেসিতে চাকরি করে সংসারে সহযোগিতা করতেন তিনি। তার বাবা আমিনুর রহমান একজন কৃষক। আর্থিকভাবে মধ্যবিত্তের নিচে অবস্থান করা পরিবারটি চরম হতাশায় ভুগছে।
পরিবার স্বীকার করেছে, নাহিদ ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে তারা জোর দিয়ে বলেন, “তিনি কখনও কোনো জঙ্গি সংগঠনের সদস্য ছিলেন না।” তাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের সময় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে নাহিদকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়।
জামিনে মুক্তি পাওয়া নাহিদ বলেন, “আমি কোনো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে। আমি ন্যায়বিচার চাই।”
এলাকাবাসী আবুল কাশেম বলেন, “নাহিদ এতিম, ফার্মেসিতে কাজ করে পড়াশোনা চালাতো। তার ছোটবেলা থেকে জানি—সে কখনো জঙ্গি হতে পারে না। ওকে অন্যায়ভাবে ফাঁসানো হয়েছে।”
নাহিদের ফুফু বলেন, “বিনা অপরাধে আট বছর জেল খেটেছে। লাখ টাকা খরচ করেছি, তবুও ন্যায়বিচার পাইনি। এখন ওর ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা করছি।”
স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন, “সাবেক সরকারের সময় সাজানো মামলায় নির্দোষ তরুণরা কেন আজও মুক্তি পাচ্ছেন না? বিচারহীনতার সংস্কৃতি কি চলতেই থাকবে?”
নাহিদের পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি, মামলা পুনঃতদন্ত ও পূর্ণবিচারের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করা হোক, যেন একজন নির্দোষ তরুণ রাজনীতির বলি না হন।
আরও পড়ুন:








