ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহমুদ হোসেন রিপন ও প্যানেল চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেনকে প্রকাশ্যে মারধর করেছেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার একটি অংশ। মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে ঘটে এ অপ্রীতিকর ঘটনা। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়লে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে দু’জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ ৩০-৩৫ জনের একটি দল পরিষদ চত্বরে প্রবেশ করে। তারা পরিষদের চলমান কার্যক্রম বন্ধ করে চেয়ারম্যান রিপন ও প্যানেল চেয়ারম্যান কামাল হোসেনকে টেনে কার্যালয়ের বাইরে এনে কিল-ঘুষি, চড়-থাপ্পড় মেরে তাদের জামাকাপড় পর্যন্ত ছিঁড়ে ফেলে।
জনতার এ হঠাৎ হামলায় স্থানীয়রা হতভম্ব হয়ে পড়েন। অনেকে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলেও সফল হননি। খবর পেয়ে দ্রুত কাঠালিয়া থানা পুলিশ ও নিকটবর্তী সেনা ক্যাম্প থেকে সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং দুজনকেই নিরাপত্তার জন্য তাদের নিজ নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেন।
জানা গেছে, চেয়ারম্যান মো. মাহমুদ হোসেন রিপন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। তিনি পরপর তিনবার চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর কাঠালিয়া উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের মধ্যে চারটি ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। কাঠালিয়া সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক নাহিদ সিকদারের মৃত্যুতে সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন প্যানেল চেয়ারম্যান জাকির হোসেন। ফলে বর্তমানে শৌলজালিয়া ইউনিয়নই উপজেলার একমাত্র সক্রিয় ইউনিয়ন পরিষদ হিসেবে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
এ ঘটনার পর স্থানীয়ভাবে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা ও গুঞ্জন। স্থানীয়দের একাংশ বলছে, ইউনিয়ন পরিষদের কিছু কর্মকাণ্ড নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছিল। তবে কারা এই হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া না গেলেও, পুলিশ জানিয়েছে—ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, ঘটনার পর থেকে চেয়ারম্যান রিপন আত্মগোপনে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন:








