কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় পূর্ব বিরোধের জেরে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) এক কর্মীকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে ছাত্রদল নেতাসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার আমলা ইউনিয়নের আমবাড়িয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন—আমলা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি অনিক খান (২৪), একই গ্রামের নাঈম (২৩), এবং আরেকজন নাঈম (২৩)।
নিহত জমির উদ্দিন (৪৮) মিরপুর উপজেলার মিটন গ্রামের বাসিন্দা। তিনি কৃষিকাজ ও দিনমজুরির পাশাপাশি জাসদের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জমির উদ্দিন স্থানীয় রাজনীতিতে জাসদপন্থী হলেও আওয়ামী লীগপন্থীদের সঙ্গেও সংশ্লিষ্ট ছিলেন। কয়েক বছর আগে একটি ঘটনায় ছাত্রদল নেতা অনিক খানকে জমির উদ্দিন চড় মারেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হয়েছে বলে ধারণা পুলিশের।
নিহতের ছেলে জিহাদ আলী জানান, সোমবার দুপুরে বাড়ি থেকে মামাবাড়ি যাওয়ার পথে জমির উদ্দিনকে সিএনজি থেকে নামিয়ে মারধর ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করে একদল যুবক। পরে তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকেল ৫টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
জিহাদ বলেন, “হাসপাতালের বেডে শুয়ে আব্বু হামলাকারীদের নাম বলেছেন। অনিক ও তার সহযোগীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করেছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।”
নিহতের স্ত্রী জ্যোৎস্না খাতুন বলেন, “প্রায় দেড় বছর আগে চায়ের দোকানে অনিককে চড় মারার ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে।”
জাসদের কুষ্টিয়া জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক অসিত সিংহ রায় জানান, জমির উদ্দিন গত বছর ৫ আগস্ট পর্যন্ত জাসদের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পরে দলের কার্যক্রমে অনিয়মিত হয়ে পড়েন।
এদিকে ছাত্রদলের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ছাত্রদলের কোনো যোগসূত্র নেই। তবে কেউ যদি অপরাধ করে থাকে, সে ব্যক্তিগতভাবে দায়ী থাকবে।”
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুল ইসলাম বলেন, “পূর্ব শত্রুতার জেরে জমির উদ্দিনকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তিনজনকে আটক করা হয়েছে। নিহতের পরিবার মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে। মামলা হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরও পড়ুন:








