কুমিল্লায় হিন্দু নারীকে ধর্ষণের ঘটনা এবার মোড় নিল ভিন্ন খাতে। স্থানীয়রা বলছেন, এটি ধর্ষণ নয় পরকীয়া। তবে ভুক্তভোগী ওই নারী বলেছেন, এসবের কোনটিই নয়, অভিযুক্ত ফজর আলীর সঙ্গে তার শুধু অর্থিক লেনদেনের সম্পর্ক। পুলিশ এরইমধ্যে ফজর আলীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তারও করেছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে কুমিল্লার মুরাদনগরে বহেরচর গ্রামে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ফজর আলী নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে গণপিটুনি দেওয়া হয়। পরে সে পালিয়ে যায়। এর আগে, কিছু ব্যক্তি ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
বিবস্ত্র ওই হিন্দু নারীর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এ নিয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ শুরু হয় সামাজিক মাধ্যমে। অনেকে এই ঘটনায় দায়ীদের দৃষ্ঠান্তমূলক বিচার দাবি করেন।
অভিযুক্ত ফজর আলীকে ঢাকার সায়দাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাহেরচর গ্রামের সুমন, রমজান, আরিফ ও অনিককেও গ্রেপ্তার করা হয়।
তবে ঘটনার মোড় ঘুড়িয়ে দেয় ভুক্তভোগী নারী নিজেই। এ ঘটনায় করা মামলা প্রত্যাহারের কথা জানান তিনি।
ওই নারী বলেন, ‘আমার মানসম্মান সব গেছে, সবাই মুক্তি পাক। স্বামী এ ঘটনা শুইনা আমারে ফোনও দেয় না। আমি দুটি শিশুসন্তান নিয়ে বাঁচতে চাই। আমি দশজনের শান্তি চাই, দেশের শান্তি চাই। আমার যা হওয়ার তো হয়েই গেছে। আমি মামলা তুলে নেব।’ কুমিল্লার মুরাদনগরে নিপীড়নের শিকার সেই নারী রোববার সাংবাদিকদের কাছে এ আকুতি জানান।
জানা যায়, ভুক্তভোগী দিপালী বালার স্বামী বিধু চন্দ্র দাস একজন দুবাই প্রবাসি। অভিযুক্ত ফজর দিপালী বালার পিতার গ্রামের বাসিন্দা। ভুক্তভোগী মাঝে মাঝে স্বামীর বাড়ি থেকে পিতার বাড়িতে বেড়ানোর জন্য আসা-যাওয়ার কালে তাদের মাঝে সখ্যতা গড়ে ওঠে। আওয়ামী লীগ আমলে ফজর আলী ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের দাপটে চলাফেরা করাই প্রতিবেশীরা প্রতিবাদ করতে পারেনি। সম্প্রতি দিপালী বালা নিজের পিতার বাড়িতে আসলে ফজর আলীকে রাতে তার নিজ পিতার বাসায় আসতে বলেন। বিষয়টি স্থানীয়রা বুঝতে পেরে একই ঘরে দিপালী বালা ও ফজর আলীকে বিবস্ত্র অবস্থায় আটক করে যা পরবর্তীতে হিন্দু মহিলাকে ধর্ষণ বলে প্রচার ও ভিডিও ছড়িয়ে দেয়।
স্থানীয়রা বলছেন, ফজর আলীর সঙ্গে ওই নারীর পরকীয়া সম্পর্ক ছিল।
এর আগে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফজর আলীকে বিএনপি কর্মী হিসেবে পরিচয় দিলেও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এ ছাড়া স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই তাকে সবাই চিনতো।
আরও পড়ুন:








