পটুয়াখালীর বাউফলে ওয়াক্ফ এস্টেটের ১১৮ একর জমি ইজারা দেওয়ার বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক হাইকোর্টের ওই আদেশ কার্যকর করার জন্য মোতোয়ালিকে লিখিতভাবে বললেও তা আমলে নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মোতোয়ালির দায়িত্বে আছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম। তিনি লোক দিয়ে ওই জমিতে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে ওই জমি চাষাবাদ করা থেকে বিরত থাকার জন্য ইজারাদারকে নির্দেশ দিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
হাইকোর্টের আদেশ ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের চিঠি সূত্রে জানা গেছে, সরকারি ওয়াক্ফ এস্টেটের উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চর নিমদী মৌজার ১৯ নম্বর ও আলগী মৌজার ১১ নম্বর খতিয়ানের মোট ১১৮ একর জমি ২০২০ সাল থেকে সরকারি বিধি অনুযায়ী টাকা জমা দিয়ে মো. মোসলেম উদ্দিন পঞ্চায়েত ইজারা নিয়ে চাষাবাদ করে আসছিলেন। কিন্তু বাংলা ১৪৩১ সালে তৎকালীন মোতোয়ালি তাঁকে ইজারা হালনাগাদ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে মোসলেম উদ্দিন হাইকোর্টে রিট পিটিশন করেন। হাইকোর্ট তাঁকে ওই জমি ইজারা দেওয়ার জন্য আদেশ দেন। সেই আদেশ অনুযায়ী মোসলেম উদ্দিনকে ইজারা দেন তৎকালীন মোতোয়ালির দায়িত্বে থাকা ইউএনও মো. বশির গাজী।
মোসলেম উদ্দিন ওই জমি চলতি বাংলা ১৪৩২ সালের জন্য ফের ইজারা হালনাগাদ করার জন্য বিধি অনুযায়ী ওয়াক্ফ এস্টেটের আগ্রণী ব্যাংকের বাউফল শাখার হিসাব নম্বরে গত বছরের চেয়ে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি মূল্যে ৭ লাখ ২৬ হাজার টাকা জমা দেন।
কিন্তু বর্তমান মোতোয়ালির দায়িত্বে থাকা ইউএনও আমিনুল ইসলাম ওই জমি মোসলেম উদ্দিনকে ১৪৩২ সালের জন্য ইজারা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। নিরুপায় হয়ে ফের তিনি চলতি বছরের ৬ মে হাইকোর্টের শরনাপন্ন হন। হাইকোর্ট ২০২৪ সালের আদেশ পুনঃবহাল রেখে ছয় মাসের জন্য স্থিতি অবস্থায় থাকার আদেশ দেন।
হাইকোর্টের ওই আদেশের কথা উল্লেখ করে ১৯ জুন পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার এএসএম নুরুল আখতার নিলয়ের স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে এই জমির মোতোয়ালি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু আজ শনিবার পর্যন্ত ওই আদেশ মানা হয়নি।
ভুক্তভোগি মোসলেম উদ্দিন পঞ্চায়েত অভিযোগ করেছেন,তিনি ওয়াক্ফ এস্টেটের একজন ওয়ারিশ। সরকারি বিধি অনুযায়ী টাকা জমি দিয়ে ওয়াক্ফ ষ্টেটের জমি ২০২০ সাল থেকে ইজারা নিয়ে চাষাবাদ করে আসছেন। মহামান্য হাইকোর্ট ও জেলাপ্রশাসকের কার্যালয় থেকে তাঁকে ওই জমি হালনাগাদ ইজারা দেওয়ার জন্য বলা হলেও তা তিনি আমলে নিচ্ছেন না। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে উল্টো সন্ত্রাসীদের দিয়ে তাঁর ইজারা নেওয়া জমিতে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে তাঁকে জমিতে চাষাবাদ না করার জন্য নির্দেশ দেন। এ কারণে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
মোসলেম উদ্দিন আরও অভিযোগ করেছেন, ইউএনও আমিনুল ইসলাম হাইকোর্টের আদেশের কপি গত ১৫ মে ডাকযোগে পেয়েছেন। ডাকবিভাগ থেকে সে তথ্য তিনি নিয়েছেন। অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য তাঁর সঙ্গে এমন অবিচার করছেন ইউএনও আমিনুল ইসলাম।
মোতোয়ালি ও ইউএনও আমিনুল ইসলাম বলেন, হাইকোর্টের আদেশের কপি এবং এ সংক্রান্ত জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কোনো চিঠি তিনি পাননি। ওই জমি চলতি বাংলা ১৪৩২ সালের জন্য কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন:








