উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বর্ষণের কারণে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত এক সপ্তাহ ধরে ধীরে ধীরে পানি বাড়লেও, গত তিন দিনে এর গতি কয়েকগুণ বেড়েছে। একই সঙ্গে জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও বাড়তে শুরু করেছে। ফলে সদর ও কাজীপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে তীব্র নদীভাঙন। এতে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি।
সদর উপজেলার খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের ভাটপিয়ারি এবং কাজীপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর, চরগিরিশ, ভেটুয়া ও খাসরাজবাড়িসহ বেশ কিছু চরাঞ্চলে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধের হার্ড পয়েন্টে বেড়েছে ৪১ সেন্টিমিটার এবং কাজীপুর মেঘাই পয়েন্টে বেড়েছে ৩২ সেন্টিমিটার। তবে এখনো পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে—সিরাজগঞ্জে ১৫৮ সেন্টিমিটার এবং কাজীপুরে ১৮০ সেন্টিমিটার নিচে।
চরগিরিশ এলাকার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন জানান, “ভাঙন অব্যাহত থাকলে চরগিরিশ এলাকার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন হুমকির মুখে পড়তে পারে।”
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, শুক্রবার (২৭ জুন) সকাল ৬টায় যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধের হার্ড পয়েন্টে পানির স্তর রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৩২ মিটার এবং কাজীপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ১৩ মিটার।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমুল হোসাইন বলেন, “উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও স্থানীয় ভারী বৃষ্টির প্রভাবে পানি বাড়লেও আজ (শুক্রবার) থেকে পানি বৃদ্ধির হার কমতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত বন্যার আশঙ্কা নেই, কারণ উজানে পানি কমছে।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নদীভাঙনের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ঘরবাড়ি, অবকাঠামো এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরি হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন:








