সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারের কাছে দেওয়া ঘুষের টাকা ফেরত চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত আবেদন করেছেন এক ভুক্তভোগী। এ ঘটনায় প্রশাসনিক তদন্ত চললেও অভিযোগ নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রিতার অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী মো. গোলাম হোসেন উপজেলার করশালিকা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি জানান, করশালিকা ও চরধুনাইল গ্রামের জনগণের নিজস্ব অর্থায়নে একটি চলাচলের রাস্তা নির্মাণে করতোয়া নদী খননের বালুর প্রয়োজন হয়। গ্রামবাসীর পক্ষে বিষয়টি নিয়ে শাহজাদপুর ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মো. জাকিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। সার্ভেয়ার সরেজমিন পরিদর্শনের পর প্রতিবেদন দেওয়ার শর্তে ৫০ হাজার টাকা উৎকোচ দাবি করেন বলে অভিযোগ।
গোলাম হোসেন জানান, বিকল্প কোনো উপায় না থাকায় জনস্বার্থে প্রতিবেদন নিশ্চিত করতে তিনি দাবিকৃত ঘুষের টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু অর্থ নেওয়ার পরও ভূমি অফিস থেকে গ্রামবাসীর পক্ষে কোনো প্রতিবেদন দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে ২৯ এপ্রিল তিনি ইউএনও বরাবর লিখিতভাবে ঘুষের টাকা ফেরতের আবেদন করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ইউএনও মো. কামরুজ্জামান জানান, বিষয়টি সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মুশফিকুর রহমানকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে দুই মাস পার হলেও তদন্ত প্রতিবেদন এখনো জমা দেওয়া হয়নি।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, “নদীর বালু নিয়ে এখন হরিলুট চলছে। কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। অথচ জনগণের টাকায় রাস্তা করতে গিয়ে ঘুষ দিয়েও কোনো সেবা পাওয়া যায়নি। এখন সেই টাকাও ফেরত মিলছে না।”
অভিযুক্ত সার্ভেয়ার মো. জাকিরুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এটি একটি সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। কেউ যদি আমার নামে অভিযোগ করে, আমি কী করতে পারি? আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি, কোনো ঘুষ নিইনি।”
এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা এসি (ভূমি) মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, “অভিযোগের তদন্ত এখনো প্রক্রিয়াধীন। এক-দুদিনের মধ্যেই প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।”
স্থানীয়রা বলছেন, ঘুষ সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্তে প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রিতা ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের স্বচ্ছতা নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন:








