দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর নবজীবন পেলো বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প। ছয় বছর ধরে থেমে থাকা এই প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের জন্য এক হাজার ৯২০ কোটি ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ ছাড় করেছে সরকার। এতে প্রকল্প বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শফিউর রহমান স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই অর্থ ছাড়ের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর একনেক সভায় বগুড়া থেকে শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন, সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। বাংলাদেশ সরকার ও ভারতীয় ঋণের যৌথ অর্থায়নে প্রায় ৫ হাজার ৫৭৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর মধ্যে ভারত দিচ্ছে ৩ হাজার ১৪৬ কোটি ৫৯ লাখ ১০ হাজার টাকা।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জের ৮৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ৯৬০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে বগুড়ায় ৫১০ একর ও সিরাজগঞ্জে ৪৫০ একর জমি রয়েছে। যৌথ জরিপ শেষে অধিগ্রহণের কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
নির্মাণ সম্পন্ন হলে বগুড়া থেকে ঢাকার দূরত্ব কমবে ১১২ কিলোমিটার। এতে যাত্রার সময় সাশ্রয় হবে প্রায় ৪ ঘণ্টা। প্রকল্পে বগুড়ায় ৪টি ও সিরাজগঞ্জে ৫টিসহ মোট ৯টি স্টেশন এবং রানীরহাট ও সিরাজগঞ্জে দুটি জংশন স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রথম ধাপে প্রকল্পটি ২০২৩ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পরামর্শক নিয়োগ ও নকশা প্রণয়নে বিলম্ব হওয়ায় মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৬ সাল পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। তবুও নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক ও রেলপথের প্রধান প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম ফিরোজ বলেন, ‘ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। জমি প্রস্তুত হলেই দ্রুত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়ে দৃশ্যমান নির্মাণকাজ শুরু হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই রেলপথ চালু হলে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার সংযোগ সহজতর হবে, সময় ও অর্থ সাশ্রয়ের পাশাপাশি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেও নতুন গতি আসবে।’
এটি বাস্তবায়িত হলে বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলের লাখো মানুষের বহুল প্রত্যাশিত রেলযোগাযোগের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন:








