
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় জামায়াতে ইসলামীর এক কর্মিসভায় ছাত্রলীগের এক সাবেক নেতার উপস্থিতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ের এ ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে গুঞ্জন ও মতবিরোধ।
সূত্র জানায়, ১২ জুন উল্লাপাড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের উদ্যোগে বজ্রাপুর বাজারে আয়োজিত কর্মিসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সিরাজগঞ্জ-৪ আসনের দলীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা রফিকুল ইসলাম খাঁন।
সভায় তোলা একটি ছবিতে দেখা যায়, অতিথিদের পাশে অবস্থান করছেন উল্লাপাড়া সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া হোসেন, যিনি বজ্রাপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং ঢাকাস্থ জামায়াত নেতা আব্দুল মতিনের পুত্র।
ছবিটি ১৭ জুন ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক আলোচনা। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের ঘরানার একজন নেতা কীভাবে জামায়াতের মঞ্চে গেলেন—তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
জবাব ও ব্যাখ্যা
এ বিষয়ে জাকারিয়া হোসেন বলেন, “আমার বাবা জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ঈদের সময় বাড়ি এসে তিনি আমাকে ওই কর্মিসভায় নিয়ে যান। আমি ছাত্রলীগে দায়িত্ব পালন করেছি, তবে বর্তমানে কোনো রাজনীতিতে সক্রিয় নই এবং কখনও শিবিরের সদস্য ছিলাম না।”
তবে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা তার এই উপস্থিতিকে সহজভাবে নিচ্ছেন না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিরাজগঞ্জ জেলা সদস্য সচিব মেহেদী হাসান বলেন, “এটি রাজনৈতিক আদর্শের বিপর্যয়। একজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতার জামায়াতের কর্মিসভায় উপস্থিতি দুঃখজনক ও নিন্দনীয়।”
এ প্রসঙ্গে উল্লাপাড়া উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক শাহজাহান আলি জানান, “জাকারিয়া জামায়াতে যোগ দিয়েছেন কি না, সে বিষয়ে আমার জানা নেই।”
পটভূমি
জাকারিয়া হোসেন ২০২০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর উল্লাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সারোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আল-মাহমুদ সরকারের স্বাক্ষরিত কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান। দীর্ঘদিন তিনি স্থানীয় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এবং আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য তানভীর ইমামের ঘনিষ্ঠ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন।
তবে স্থানীয় সূত্র বলছে, ৫ আগস্টের সরকারবিরোধী আন্দোলনের পর থেকেই তার জামায়াত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। এ ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে আদর্শচ্যুতি ও দ্বিমুখী অবস্থানের প্রশ্ন উঠছে।
আরও পড়ুন: