
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে জিবিজি কলেজের নৈশ প্রহরী ইউসুফ (৩৫) হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করেছেন পুলিশ। কলেজের সহকর্মীর হাতেই খুন হন নৈশ প্রহরী ইউসুফ। আটককৃত তিন জনের মধ্যে দুই নৈশ প্রহরী মোঃ সবুজ মিঞা ওরফে ফরিদ (৪৫) ও মোঃ জুয়েল (৩৫) টাঙ্গাইল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছেন। তারা দু'জন সরাসরি ইউসুফ হত্যার সাথে জড়িত বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকতা এসআই রাজু আহমেদ।
পুলিশ জানায়, ভিকটিম ইউসুফ, আসামী মোঃ জুয়েল ও সবুজ মিঞা ওরফে ফরিদ ঘাটাইল ব্রাহ্মণশাসন সরকারি কলেজে নৈশ প্রহরী হিসেবে কর্মরত ছিল। জুয়েলের বাড়ি ঘাটাইল উপজেলার গৌরিশ্বর গ্রামে। অপর আসামী মোঃ সবুজ মিঞা ওরফে ফরিদের বাড়ি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার লাংঙ্গুলিয়া গ্রামে।
ইউসুফের বাড়ি কলেজর পূর্বপাশে থাকায় প্রতিনিয়ত সূর্য ডোবার আগেই কলেজে এসে বাতি জ্বালাতো ইউসুফ। জুয়েল ও ফরিদ অনেক দেরিতে কলেজে আসতো। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকতো। গত ৫ জুন কর্মরত তিন নৈশ প্রহরী রাতে যথারীতি ডিউটি পালন করে। এদের মধ্যে ইউসুফের শরীর খারাপ থাকায় কলেজের বারান্দায় মশারি টাঙ্গিয়ে শুয়ে পড়ে। রাত আনুমানিক পৌনে ১টা থেকে আড়াইটার সময় ইউসুফ ঘুমিয়ে পড়লে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ফরিদ ও জুয়েল ঘুমন্ত অবস্থায় ইউসুফের বুকের উপর উঠে শ্বাসরোধ এবং হাত-পা বেধে ফেলে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত করে কাথা দিয়ে পেঁচিয়ে লাশ কলেজের উত্তর-পূর্ব কোণে ডোবায় কচুরি পানা দিয়ে ঢেকে রাখে। নিখোঁজের ৬ দিন পর লাশ পঁচে দুর্গন্ধ বের হলে স্থানীয় লোকজন ইউসুফের লাশ সনাক্ত করে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
এ মর্মান্তিক ঘটনায় পুলিশ সন্দেজনকভাবে তিনজনকে সাথে সাথে আটক করে থানায় নিয়ে যান। পরে ইউসুফের স্ত্রী আল্পনা খাতুন বাদী হয়ে গত ১০ জুন ঘাটাইল থানায় আটককৃত তিন জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ১১ জুন টাঙ্গাইল বিজ্ঞ আদালতে আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত ৩ দিন মঞ্জুর করেন।
এদিকে আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তাদের মধ্যে মোঃ ফরিদ ও জুয়েলের তথ্য অনুযায়ী গত ১৩ জুন ইউসুফের ব্যবহৃত টর্চ লাইট, নোকিয়া মোবাইল ফোন, বাঁশি ও বল্লম মাটিতে পুঁতিয়ে রেখেছে বলে স্বীকার করেন। পরে পুলিশ তাদেরকে নিয়ে মাটিতে পুঁতে রাখা জিনিসপত্র কলেজের পাশ থেকে উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে আসামীদেরকে টাঙ্গাইল বিজ্ঞ আদালতে হাজির করা হলে সবুজ মিঞা ওরফে ফরিদ ও জুয়েল চাঞ্চল্যকর নৈশ প্রহরী ইউসুফ হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজু আহমেদ।
এ বিষয়ে ঘাটাইল থানার ওসি মোশারফ হোসন জানান, মামলায় আটককৃত তিন আসামীর মধ্যে নৈশ প্রহরী হত্যার সাথে ২জন সরাসরি জড়িত বলে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকার করেছে। মামলাটি তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুন: