
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিনই নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় হাসপাতালজুড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র বেড সংকট। ফলে অনেককে ঠাঁই নিতে হচ্ছে হাসপাতালের বারান্দা ও লিফটের সামনের ফ্লোরে।
হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা অভিযোগ করছেন, নিয়মিত চিকিৎসকের সেবা পাচ্ছেন না। এছাড়া প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ওষুধের জন্য তাদের বাইরে ক্লিনিক ও ফার্মেসিতে যেতে হচ্ছে।
ভর্তি হওয়া শিল্পী নামের এক রোগী বলেন, আমি এক সপ্তাহ ধরে ভর্তি আছি। কোনো পরীক্ষা হাসপাতালে হয় না, সব বাইরে করাতে হচ্ছে। এমনকি ওষুধও বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।
রোগীর স্বজন মো. সাইদুল বলেন, আমার খালা ডেঙ্গু পজিটিভ। হাসপাতালে এসে দেখি কোনো বেড নেই, বাধ্য হয়ে ফ্লোরে বিছানা করে চিকিৎসা নিচ্ছি। চার ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কোনো চিকিৎসক খোঁজ নেননি। রোগীর চাপ বাড়ছে, কিন্তু সেভাবে প্রস্তুতি নেই।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাসকিয়া সিদ্দিকাহ বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর জুন মাসেই রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, তবে চাপ সামলানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা খুব জরুরি। সবাই যদি নিজ নিজ বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখতেন, তাহলে এত মানুষ আক্রান্ত হতো না।
বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ জানান, চলতি বছর এখন পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৭০৫ জন। এর মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৫ জন। হাসপাতালের ধারণক্ষমতার তুলনায় রোগীর চাপ অনেক বেশি। তাই বাধ্য হয়ে ফ্লোরে ও বারান্দায় বিছানা পেতে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
সিভিল সার্জন আরও জানান, হাসপাতালের স্যালাইন সংকট নিরসনে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আগামী দু-এক দিনের মধ্যেই এই সংকট আর থাকবে না। বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বরগুনা হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন এবং চিকিৎসাসেবার মান বাড়াতে পদক্ষেপ নিয়েছেন। ইতোমধ্যে দুজন চিকিৎসক ও ১০ জন সিনিয়র নার্স যোগ হয়েছেন, আরও চারজন চিকিৎসককে পদায়ন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: