রবিবার

১৫ জুন, ২০২৫
১ আষাঢ়, ১৪৩২
২০ , ১৪৪৬

চলনবিলে হঠাৎ বন্যা, পানির নিচে ১১৩ হেক্টর বোরো ধান

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১ জুন, ২০২৫ ১৬:২২

শেয়ার

চলনবিলে হঠাৎ বন্যা, পানির নিচে ১১৩ হেক্টর বোরো ধান
পানির নিচে ১১৩ হেক্টর বোরো ধান।

উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতে সিরাজগঞ্জের চলনবিলাঞ্চলে হঠাৎ বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে উল্লাপাড়া, তাড়াশ ও শাহজাদপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের কাঁচা-পাকা বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কৃষকেরা বলছেন, এই বন্যায় তারা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

বুধবার (১১ জুন) সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নিম্নাঞ্চলের অনেক জমিতে কোমরসমান পানি জমে আছে। অধিকাংশ কৃষকের ধান এখনও কাটেনি। ফলে জমির ধান পচে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আবার পানির মধ্যে ধান কাটতে খরচও বেড়েছে কয়েকগুণ।

তাড়াশের মাগুড়াবিনোদ গ্রামের কৃষক সেলিম শেখ বলেন, “১০ বিঘা জমিতে ব্রি-২৯ ধান করেছিলাম। ঈদের পর কাটার কথা ছিল। কিন্তু কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জমির সব ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন যে ধান কাটা যাচ্ছে, তাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।”

ঘরগ্রামের কৃষক আলতাব শেখ জানান, “সগুনা, মাগুড়াবিনোদ ও নওগাঁ ইউনিয়নের অন্তত ৩০টি গ্রামের ধান পানির নিচে। একই অবস্থা চলনবিলের আরও আট উপজেলায়।”

উল্লাপাড়ার আজগর আলী বলেন, “১০ বিঘার মধ্যে মাত্র ৫ বিঘার ধান কাটতে পেরেছি। বাকিগুলো পানির নিচে তলিয়ে আছে। এবার লোকসান হবেই।”

শাহজাদপুরের কৃষক আশরাফ বলেন, “ঋণ করে ধান চাষ করেছিলাম। সব পানিতে তলিয়ে গেছে। কীভাবে চলবো, বুঝতে পারছি না।”

নিমাইচড়া গ্রামের আয়নাল মন্ডতল বলেন, “এবার ধান পাকতেই হঠাৎ বন্যা এসে গেল। এখন ঘরে তুলতে পারছি না।”

নাটোরের কৃষক মফিজ উদ্দিন জানান, “পানিতে ধান কাটতে বিঘাপ্রতি ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। শ্রমিক সংকটও দেখা দিয়েছে।”

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “চলনবিলের প্রায় ৯৩ ভাগ ধান কাটা শেষ হলেও বিলের নিচু এলাকায় কিছু নাবি জাতের ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তাড়াশ ও শাহজাদপুরে ১১৩ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে, তাঁদের প্রণোদনার আওতায় আনা হবে।”

banner close
banner close