
কোরবানির পশুর গোশত নিম্ন আয়ের মানুষের হাতে পৌঁছে দিতে অন্যরকম এক ব্যবস্থা চলে আসছে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের দেওয়ান পাড়া গ্রামে।
এই গ্রামে কোরবানির পশুর গোশত এক জায়গায় জড়ো করে গ্রামের যারা কোরবানি দেয়নি তাদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।
ঈদের আনন্দ যেন সবাই উপভোগ করতে পারে সে লক্ষ্যে সমাজের কোরবানির পশুর গোশত এক জায়গায় জড়ো করে গ্রামের যারা কোরবানি দেয়নি তাদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেন বলে জানান আয়োজকরা। এটি দেওয়ান পাড়া সমাজের শত বছরের ঐতিহ্য।
দেওয়ান পাড়ার প্রবাসী শওকত হোসেন বাংলা এডিশনকে বলেন, বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই আমরা দেখছি মসজিদের মাঠে গোশত নিয়ে আসেন কোরবানি দাতারা৷ এরপর ব্যবস্থাপনা কমিটি সেই মাংস প্যাকেটজাত করে বণ্টন করেন। তালিকায় থাকা কেউ গোশত না নিলে তার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। যুগের পর যুগ ধরে এ রীতি চলে আসছে আমাদের গ্রামে।
স্হানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওসমান প্রতিবেদককে বলেন, দেওয়ান পাড়ায় শতবছর ধরে এভাবে কোরবানির গোশত বণ্টন হয়ে আসছে। এটি একটি ভালো উদ্যোগ। এতে ধনী-গরিব সবাই ঈদ আনন্দ ভাগ করে নিতে পারছেন। এ প্রথাটি এক প্রজন্মের হাত ধরে অন্য প্রজন্মেও টিকে থাকুক এটিই এখন প্রত্যাশা।
মাংসের জন্য কাউতে ঘুরতে হয় না কারও দ্বারে দ্বারে। সামাজিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতির এই মেলবন্ধন চলছে যুগ যুগ ধরে। শতবছর ধরে এই গ্রামের বাসিন্দা, যারা কোরবানি দেন, তারা মাংসের তিনভাগের একভাগ এখানে দিয়ে যান এখানে।
ঈদের দিন দুপুরে মাংসের ব্যবস্থাপনায় থাকা মাস্টার নাছির আহমদ বলেন, এ সমাজে ১৫৭ পরিবার রয়েছে। তার মধ্যে ৪৯টি পরিবার পশু কোরবানি দিয়েছে। ঈদের দিন সকালে তারা তাদের জবাইকৃত পশুর এক-তৃতীয়াংশ মসজিদের মাঠে দিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় মুরুব্বিদের উপস্থিতিতে তালিকা করে মাংস জমা হওয়ার পর নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে তা কেটে ভাগ করে দিয়েছি। এমন সামাজিক সম্প্রীতির অনন্য মেলবন্ধন পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা গভীর করে বলে জানান তিনি।
সকল ভেদাভেদ ভূলে এভাবে চলুক যুগের পর যুগ। ধনী-গরীব সবার ঘুরে আওয়াজ উঠুক ঈদের আনন্দের এমনটাই চাওয়া সকলের।
আরও পড়ুন: