রবিবার

১ জুন, ২০২৫
১৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
৩ জিলক্বদ, ১৪৪৬

বান্দরবানে টানা বৃষ্টিপাতে বন্যা ও পাহাড় ধসের শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩০ মে, ২০২৫ ২১:৪৬

শেয়ার

বান্দরবানে টানা বৃষ্টিপাতে বন্যা ও পাহাড় ধসের শঙ্কা
টানা বৃষ্টিপাতে বন্যা ও পাহাড় ধসের শঙ্কা।

পার্বত্য জেলা বান্দরবানে টানা দুই দিন ধরে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এখনো অব্যাহত আছে বৃষ্টিপাত। থেমে থেমে দমকা ঝড়ো হাওয়ার সাথে ভারি বর্ষণের ফলে বন্যা আতঙ্কে রয়েছে জেলাবাসী। এছাড়া অপরিবর্তিত আবহাওয়া ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী জনসাধারণের ঘুম নেই চোখে। গতকাল রাতের ভারি বর্ষণে অনেকেই নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দিবাগত রাত থেকে শুক্রবার (৩০ মে) বেলা ১১টা পর্যন্ত জেলায় ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ সময় জেলার পৌর এলাকার বনরূপা, হাফেজঘোনা, মেম্বার পাড়াসহ বেশ কিছু নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে টানা বৃষ্টিতে সকালে বান্দরবান-রুমা সড়কের মুরুং বাজার, খুমী পাড়া এলাকায় পাহাড়ের মাটি ধসে রাস্তার ওপর পড়ায় জেলা সদরের সাথে রুমার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। এছাড়া বৃষ্টিপাতের কারণে বেশ কয়েকটি জায়গায় পাহাড়ের মাটি ধসে রাস্তার ওপর পড়ায় যানবাহন চলাচলের বাধা সৃষ্টি হয়েছে।

টানা ভারি বৃষ্টিপাতের ধারাবাহিকতায় জেলা প্রশাসন ও বান্দরবান পৌরসভার উদ্যোগে সচেতনতা মূলক মাইকিং অব্যাহত আছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী জনসাধারণকে নিরাপদে আশ্রয় গ্রহণের জন্য বলা হচ্ছে।

এদিকে বান্দরবান জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে জেলার সকল উপজেলায় অস্থায়ী ২২০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে বান্দরবান সদরে ৪৬ টি, রুমা উপজেলায় ২৮ টি, রোয়াংছড়ি উপজেলায় ১৯, থানচিতে ১৫, লামায় ৫৫, আলীকদমে ১৫ এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় - ৪২ টি সহ সর্বমোট ২২০ টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনাতন কুমার মন্ডল জানান, গতকাল সন্ধ্যা থেকে আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত জেলায় ২২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। টানা বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়াসহ পাহাড় ধসের শঙ্কা আছে।

এদিকে টানা ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে উদ্ভুত পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার সকল প্রস্তুতি নেওয়া আছে বলে নিশ্চিত করেছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি।

তিনি বলেন, টানা বৃষ্টিপাতের কারণে উদ্ভুত সকল পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার সকল নির্বাহী কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনসহ উপজেলা প্রশাসনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সরেজমিনে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। জেলার পাহাড় ও অধ্যুষিত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী জনসাধারণকে ঝুঁকি না নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হচ্ছে। এ জন্য জেলা ও উপজেলায় মোট ২২০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

ধারাবাহিক টানা ভারি বৃষ্টিপাতে জেলার সকল জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন ভূমিকা পালন ও দায়িত্বশীল হওয়া এবং পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক।

banner close
banner close