
সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে মাঠের রাজনীতি থেকে অনেকটাই দূরে সরে থাকা আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী নতুন কৌশলে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছেন। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া কয়েকটি পোস্টে এই গোপন তৎপরতার ইঙ্গিত মিলেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, নেতাকর্মীরা মূলধারার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পরিবর্তে গোপনীয়তানির্ভর টেলিগ্রাম অ্যাপ বেছে নিয়েছেন যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে।
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা আশরাফুল কামাল মিঠু তার ফেসবুকে লিখেছেন, চট্টগ্রাম উওরে টেলিগ্রামে সেই লেভেলের চাপাবাজি চলে আজকে। নেত্রীর সামনে তো অনেক চাপাবাজি করলেন এবার মাঠে একটা মিছিল এর আয়োজন করেন।'
এই বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, টেলিগ্রামে কোনো পরবর্তী কার্যক্রম নিয়ে নিষ্ক্রিয় নেতাকর্মীদের মধ্যে সরব তৎপরতা চলছে।
অন্য এক যুবলীগ নেতা শেখ আব্দুল আউয়াল তুহিন লিখেছেন— আজকে আমাদের চট্টগ্রাম উত্তরে ৬৬ তম মিটিং এখনো করতেছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা, কিন্তু আজকে আমি এতক্ষণ ঐ গ্রুপে বক্তব্য শুনে খুবই হতাশ মানেই হতাশ!! কারা কারা বক্তব্য দিচ্ছে জানেন আমি শুধু আমাদের মিরসরাইয়ের চিত্র তুলে দরি , প্রথম দুই জাহাঙ্গীর তারপর,বিপ্লব ভাই,ভিপি নিজাম ভাই,প্রদীপ দাদা, মামুন ভাই, আর কিছু নেতার বক্তব্য শুনে শুধুই আক্ষেপ!! তবে তার বিতরে দেখলাম মিরসরাইয়ের প্রবীন এক আওয়ামী পাগল টিটু ভাই ডুকে গ্রুপিং নিয়ে কথা বলতে লাইন কাট কাট করে আউট !! যারা এতদিন মিরসরাইতে মিছিল /মিটিং/চিকা ইত্যাদি করে জেল জুলুমের শিকার তাদের কোন অস্তিত্ব আর নেত্রীর কথা শোনারও অধিকার পেল না বা দেখলাম না!!আর রুহেল ভাইয়ের পরে এলিট ভাই তারপরে কিছু থানার নেতাদের ড্রাইভারদেরও বক্তব্য দিতে দেখে লিভ নিয়ে বের হলাম !? চামচামি আর তেল মারা আর মাইমেন ছাড়া এখনো বের হতে পারলো না জেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতারা লজ্জা আপনাদের নিয়ে চি!!! আমি আমাদের মত মাঠের কর্মীদের অনুরোধ করবো সাবধানে পা বাড়াবেন আগামীতে, অন্যথায় নিজের জীবন হারানোর সম্ভাবনা অনেক বেশি।
এই পোস্টে স্পষ্টভাবে শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে মিটিং অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে। ফলে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—এই মিটিংয়ের আড়ালে কি কোনো গোপন পরিকল্পনা বা রাজনৈতিক নাশকতার ছক আঁকা হচ্ছে?
এদিকে, যুবলীগ নেতা মোজাম্মেল ফেসবুকে লিখেছেন— টেলিগ্রামে যুক্ত হলেও শেখ হাসিনার সঙ্গে আছি না হালেও আছি। যারা ভাইয়া গ্রুপ করে তারা টেলিগ্রামে যুক্ত হবে। আগামীতে ভাইয়া গ্রুপের অস্তিত্ব থাকবে না।
এই প্রতিবেদকের কাছে এমন আরও বেশ কয়েকটি ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট সংরক্ষিত আছে। এসব পোস্ট বিশ্লেষণ করে বোঝা যায়, মাঠে সক্রিয়তা কম থাকলেও অনলাইনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের তৎপরতা বাড়ছে। যা ভবিষ্যতের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
মিরসরাই থানার অফিসার ইনচার্জ আতিকুর রহমান জানান—“মিরসরাইয়ে যাতে কোনো রাজনৈতিক সহিংসতা বা বেআইনি কার্যক্রম না হয়, তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সক্রিয় আছে। অনলাইন ও অফলাইন—দুই ক্ষেত্রেই আমরা নজরদারি করছি।”
আরও পড়ুন: