
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থেকে হাটপাঁচিল পর্যন্ত যমুনার ডান তীরে রক্ষা প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয়দের মধ্যে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পের মেয়াদ প্রথমে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত নির্ধারিত থাকলেও তা বাড়িয়ে ২০২৫ এবং পরে আবার ২০২৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা হয়েছে।
৬৫৩ কোটি টাকার এই প্রকল্পে প্রায় ছয় কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের কথা রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকল্প বাস্তবায়নে তদারকির অভাবে ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত তেমন কোনো কাজ হয়নি। এখন বর্ষা মৌসুম ঘনিয়ে আসায় তড়িঘড়ি করে কাজ করা হচ্ছে, তাও নানা অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে।
হাটপাঁচিল গ্রামের বাসিন্দা ইয়াসিন চতুর বলেন, “সঠিক সময়ে কাজ শুরু হলে এতো ভাঙন হতো না। কোটি কোটি টাকা খরচ হলেও কাজের অগ্রগতি চোখে পড়ে না।” স্থানীয় আরও অনেকে অভিযোগ করেন, নির্ধারিত পরিমাণে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে না এবং নিম্নমানের আরসিসি ব্লক ব্যবহৃত হচ্ছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, বাঁধ নির্মাণে ব্যবহৃত মাটি, বালু, জিওব্যাগ ও ব্লকের কাজ বিভিন্ন পয়েন্টে চললেও অধিকাংশ কাজই শুরু হয়েছে গত বছরের জুলাই মাসের পর থেকে। কিছু এলাকায় এখনো মাটির কাজ কিংবা ব্লক বসানোর কাজ বাকি রয়ে গেছে। কোথাও আবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিও পাওয়া যায়নি।
ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সালেহ আহমেদের প্রকৌশলী সোহেল রানা বলেন, “আমাদের প্যাকেজে ৭৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি বর্ষার আগেই বাকি অংশ শেষ করতে পারব।” অন্যদিকে, মেসার্স খন্দকার শাহিন আহমেদ ও এমবিএএল-এমএসআর জিভি নামে দুটি প্রতিষ্ঠানের কাজ কাগজে-কলমে যথাক্রমে ৯৫.২৩ শতাংশ ও ২৬.৭০ শতাংশ দেখানো হলেও বাস্তবে দৃশ্যমান অগ্রগতি অনেক কম।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, “প্রকল্পের কাজ ৮৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫১১ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ৬৯ শতাংশ বিল পরিশোধ করা হয়েছে। সময়মতো কাজ শেষ করতে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।”
স্থানীয়দের দাবি, অনিয়ম ও গাফিলতির দায়ে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অপসারণ করতে হবে। অন্যথায় প্রতিবছরই যমুনার ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে পথে বসতে হবে নদী তীরবর্তী মানুষদের।
আরও পড়ুন: