
আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে টাঙ্গাইলে কোরবানির জন্য পর্যাপ্ত পশু প্রস্তুত রয়েছে। জেলার খামারিরা বর্তমানে শেষ মুহূর্তের গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও প্রায় ত্রিশ হাজার পশু উদ্বৃত্ত থাকবে, যা ঢাকা ও আশপাশের জেলার পশুর হাটে সরবরাহ করা হবে। খামারিরা প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে পশু মোটাতাজাকরণ করায় স্বাস্থ্যসম্মত কোরবানির পশু পাওয়ার আশা করছেন ক্রেতারা।
জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে টাঙ্গাইল জেলায় এ বছর ২ লাখ ১১ হাজার ৯৭৪টি কোরবানির পশুর চাহিদার বিপরীতে কোরবানিযোগ্য ২ লাখ ৩৬ হাজার ৯৭০টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র গরুর সংখ্যাই ১ লাখ ৫০ হাজার ৭০টি। এই হিসাব অনুযায়ী, জেলার চাহিদা মিটিয়েও অতিরিক্ত ২৯ হাজার ৪৪৪টি কোরবানির পশু উদ্বৃত্ত থাকছে। জেলার ১২টি উপজেলায় ছোট-বড় মোট ২৬ হাজার ২০৩টি খামারে এই পশুগুলো সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে।
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন খামার ঘুরে দেখা যায়, খামারিরা পশুখাদ্যের দাম বৃদ্ধি নিয়ে কিছুটা চিন্তিত হলেও কোরবানির জন্য পশু প্রস্তুতে কোনো কমতি রাখছেন না। টাঙ্গাইলের অন্যতম বৃহৎ 'চকদার গরুর খামার'-এর স্বত্বাধিকারী রাফি চকদার বলেন, এ বছর ঈদুল আজহার জন্য ১০০টি গরু মোটাতাজা করেছি। তবে গো-খাদ্যের দাম অনেক বেশি হওয়ায় লাভের ব্যাপারে কিছুটা শঙ্কায় আছি। একশত ডেসিমেল জমিতে উন্নত জাতের ঘাস চাষ করেছি। এর পাশাপাশি কুঁড়া, ভুসি ও ভুট্টা মিশ্রিত সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি খাবার দিচ্ছি।
একই ধরনের উদ্বেগের কথা জানালেন ভূঞাপুর উপজেলার 'ছাত্তার এগ্রো ফার্ম'-এর মালিক ছাত্তার হোসেন। তিনি বলেন, কোরবানির ঈদের জন্য ২৫টি গরু প্রস্তুত করেছি। খাদ্যের যে আকাশছোঁয়া দাম, তাতে লাভ হবে কিনা বলা মুশকিল। আমার গরুর খাবারের তালিকায় রয়েছে খৈল, ভুসি, খড়, সবুজ ঘাস, ভুট্টা ও ছোলার মতো প্রাকৃতিক উপাদান।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, জেলার চাহিদা মিটিয়েও পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। তাই অহেতুক বা সিন্ডিকেট তৈরি করে দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ এবার থাকছে না। তিনি আরও জানান, জেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর থেকে বছরজুড়ে খামারিদের যাবতীয় তথ্য, পরামর্শ, ভ্যাকসিন এবং চিকিৎসাসেবা সহ সকল প্রকার সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে এবং গরু মোটাতাজাকরণের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে ঘাস-খড়ের পাশাপাশি খৈল, গুঁড়া ও ভুসি খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: