ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় স্কুলের মাঠে সড়ক নির্মাণের ইট-বালু-পাথরের ভাগাড় গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে। স্কুলের মাঠেই চলছে ইট-পাথর ও বিটুমিন জ্বালানোর কাজ। ধোঁয়া এড়াতে স্কুলের বারান্দা ঢেকে ফেলা হয়েছে পলিথিনে। এতে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। প্রকাশ্য দিবালোকে স্কুলের মাঠে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের এমন কর্মকাণ্ড ক্ষুব্ধ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বুধবার (২১ মে) বেলা ১০টার দিকে সদর উপজেলার কালীচরণপুর ইউনিয়নের মোসলেম উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে সড়ক নির্মাণের পাথর-বালু ও বিটুমিনের ব্যারেল পড়ে আছে। পাশেই চলছে বিটুমিন জ্বালানোর কাজ। এতে কালো ক্ষতিকর ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ছে পুরো এলাকায়। ধোঁয়া এড়াতে স্কুলের বারান্দা ঢেকে ফেলা হয়েছে পলিথিনে। এতে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। পরে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যহানীর শঙ্কায় বেলা ১১টার দিকে বাধ্য হয়ে স্কুল ছুটি ঘোষণা করা হয়।
সোহেল রানা নামে শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, আমাদের স্কুলের মাঠে রাস্তার নির্মাণের পাথর, বালু ও পিচ জ্বালানোর কাজ করছে। বিটুমিনের কালো ধোঁয়ায় ক্লাস বন্ধ রয়েছে। স্কুল মাঠে পাথর ছড়িয়ে পড়েছে। এতে আমাদের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলিবর্দ্দি বিশ্বাস বলেন, স্কুলের মাঠে সড়ক নির্মাণ সামগ্রী রাখার ব্যাপারে আমি সহ আমার সহকর্মী সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিরোধীতা করেছিলাম। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপে আমরা কিছু করতে পারিনি। আমরা বাধ্য হয়েছি ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করতে।
জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের সামনে হামদহ স্টান্ড থেকে নারিকেলবাড়িয়া বাজার পর্যন্ত সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হয় মাস চারেক আগে। ওই সড়ক নির্মাণের জন্য পাথর-বালু ও বিটুমিনের ব্যারেল মোসলেম উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে রাখে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় বিএনপির নেতাদের ম্যানেজ করে প্রভাবখাটিয়ে ঠিকাদার মিঠু খাঁন ও রাসেল আহমেদ স্কুল মাঠে মালামাল রেখেছে। এবং শেষ পর্যন্ত স্কুলের মাঠেই বিটুমিন জ্বালানোর কাজ করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
এ বিষয়ে ঠিকাদার মিঠু খাঁ বলেন, সড়কটির অবস্থা খুবই নাজুক ছিল। এলাকার মানুষ ও স্কুল কমিটির লোকজন সবাই বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে স্কুলের মাঠ ব্যবহারের জন্য আমাদের অনুমতি দেয়। বিটুমিন এক থেকে দুইদিন জ্বালানো হয়। মাঠে ধান ও অন্যান্য ফসল থাকায় আমরা খোলা জায়গা না পেয়ে স্কুলের মাঠ ব্যবহার করেছি।
সদর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ওই সড়কটির কাজ করছে ঠিকাদার মিঠু খা ও রাসেল। তারা সড়ক নির্মাণের মালামাল স্কুলের মাঠে রেখেছে কিনা জানা নেই। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নাম কাগজপত্র দেখে জানাতে পারব।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান বলেন, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি যদি চায়, তাহলে তারা স্কুলমাঠ ব্যবহার করার অনুমতি দিতে পারে। তবে পাঠদান ব্যাহত হয় বা শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি হয়, এমন কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখব।
আরও পড়ুন:








