চুয়াডাঙ্গার দর্শনা জয়নগর আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন ভবন থেকে পুলিশ কনস্টেবল শামিম রেজা সাজুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় একমাস পর সাত সহকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দর্শনা থানা আমলি আদালতে মামলাটি করেন নিহত পুলিশ কনস্টেবলের বাবা হাসেম আলী ফরাজী।
মামলায় আসামি করা হয়েছে- এএসআই তারেক মাহমুদ, লাভলুর রহমান, মিঠুন হোসেন, সহিদুল ইসলাম, কনস্টেবল মেহেদী হাসান, ইমিগ্রেশন বিভাগের ইনচার্জ এসআই রমজান আলী ও কনস্টেবল সোহেল রানাকে। আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) দায়িত্ব দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী নাজমুল হাসান লাভলু বলেন, ‘বাদীর অভিযোগ আদালতে দাখিল করা হয়েছে। আদালত অভিযোগ গ্রহণ করে তা তদন্তে সিআইডিকে দায়িত্ব দিয়েছেন।’
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, তার ছেলে শামিম রেজা বিবাহিত এবং পাঁচ বছর বয়সী একটি ছেলেসন্তান আছে। তার স্ত্রী একমাত্র সন্তান নিয়ে তার বাড়িতে থাকতেন। শামিম চেকপোস্টের নতুন ভবনের দোতলায় অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে থাকতেন। সংসার জীবনে কোনো অশান্তি ছিল না।
দর্শনা ইমিগ্রেশনে বদলি হওয়ার পর থেকেই শামিম রেজা বৈষম্যের শিকার ছিলেন। বিভিন্ন খুঁটিনাটি কারণে ১ থেকে ৬ নম্বর আসামিরা তাকে মানসিক চাপে রাখতেন এবং কারণে-অকারণে তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার ও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতেন। শামিম প্রতিবাদ করায় ওই ছয়জন তাকে খুন করার হুমকি দিতেন। এসব কারণে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, ১৭ এপ্রিল ১-৫ নম্বর আসামিরা কনস্টেবল শামিমকে খুন করার হুমকি দিলে তিনি নিজগ্রামের বাসিন্দা সহকর্মী (৭ নম্বর আসামি) সোহেল রানাকে হোয়াটসঅ্যাপে তা জানান। সোহেল বিষয়টি শামিমের বাড়ির কাউকে না জানিয়ে ওই ছয় আসামিকে তা জানিয়ে দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আসামিরা একে অপরের সহযোগিতায় ১৭ এপ্রিল রাত পৌনে ১১টার পর যেকোনো সময় শামিমকে হত্যা করে কক্ষের মধ্যে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে মরদেহ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করেন।
উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গার দর্শনা জয়নগর আন্তর্জাতিক চেকপোস্টের ইমিগ্রেশন বিভাগে কর্মরত শামিম রেজা সাজুর ঝুলন্ত মরদেহ গত ১৮ এপ্রিল সকালে চেকপোস্টের নতুন ভবনের দোতলার একটি কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়।
ওই ঘটনায় দর্শনা থানায় অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছিল। শামিমের মরদেহ উদ্ধারের এক মাসের বেশি সময় পর তার বাবা আদালতে হত্যা মামলা করেন। শামিম কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার ঝুটিয়াডাঙ্গা গ্রামের হাসেম আলী ফরাজীর ছেলে।
আরও পড়ুন:








